কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি না থাকায় ১০ সহস্রাধিক কৃষক বাড়তি সেচ খরচ মেটাতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এতে ব্যাহত হচ্ছে বিএডিসির সেচ প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে সহস্রাধিক টন ধান উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়রা মাথাভাঙ্গা নদী খননের দাবি জানিয়েছেন।
মাথাভাঙ্গা নদীর উৎপত্তি কুষ্টিয়া জেলার মহিষকুণ্ডি গ্রামের পদ্মা নদী থেকে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। বৃষ্টির মিষ্টি পানি সুন্দরবনে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শিকারপুর, করিমপুরের কাছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্তরেখা। কিন্তু নদীটি এখন মৃতপ্রায়।
পানির অভাবে বিএডিসির সেচ প্রকল্পর ১০টি পাওয়ার পাম্পের অধিকাংশই বন্ধের পথে। নাব্যতা সংকটে কৃষকেরা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না।
কৃষকরা জানান, গভীর কিংবা অগভীর নলকূপ থেকে ভূগর্ভস্থ পানি সেচকাজে ব্যবহার করলে একরপ্রতি তাদের জ্বালানি খরচসহ লাগে ৮-১০ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রকল্পের পানিতে একরে সেচ খরচ দুই হাজার টাকার মতো। কৃষি বিভাগের হিসাবে প্রকল্পের অধীনে দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর, আদাবাড়ীয় ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার কৃষক এর সুবিধাভোগী। তারা নামমাত্র খরচে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পেয়ে আসছিলেন। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ যেমন কমতো, তেমনি গড়ে ৭০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয় হতো। কৃষকরা প্রতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৩০ হাজার টন ধান উৎপাদন করে আসছিলেন, যা এখন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প ম্যানেজার ফারুখ হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, রাতভর ঝর্নার পানি জমা করে পরদিন ২-৩ বিঘা জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে। মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি না থাকায় কৃষকরা জমিতে সেচ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাতে ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া বিএডিসির প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. আলী আশরাফ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কৃষকরা জানিয়েছেন তারা জমিতে সেচ পাচ্ছেন না। মাথাভাঙ্গা নদীতে পানি নেই। স্থান বিশেষ শুকিয়ে গেছে। নদীটা আমরা পরিদর্শন করে দ্রুত খননের ব্যবস্থা করবো।