মাতৃগর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না জানিয়ে নতুন নীতিমালা করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তারসহ সবাইকে এই নীতিমালা মানতে হবে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার পরিচালক ডা. তাহমিনা সুলতানা এ প্রতিবেদন জমা দেন। এর আগে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কেন অবৈধ নয় জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৬ জানুয়ারি এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান স্বাস্থ্য সচিব, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমাজ কল্যাণ সচিবকে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে তাদেরকে তিন দিনের মধ্যে সকল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক, ক্লিনিককে কর্তৃপক্ষকে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা-লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ করতে নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, আমাদের দেশে এখনও বেশির ভাগ মানুষের ছেলে সন্তানই কাম্য। কারণ তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক, তারা আয় করে, বেশি শক্তিশালি। এমন কি অনেক মহিলাও মনে করে ছেলে সন্তান তাদের ভবিষ্যতের সুরক্ষা দেবে। এ অবস্থায় যদি পরীক্ষার মাধ্যমে পেটে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাঙ্ক্ষিত না হলে গর্ভবতী মায়ের শারিরীক ও মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে। মা যদি হতাশায় ভোগে তবে বাচ্চার মস্তিক গঠন /বিকাশ ঠিকভাবে হয় না। চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পেটে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পেটের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ হওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, গর্ভবতী মা ও শিশুর কল্যাণের জন্য, বা অনাগত সন্তানের সুস্থতা জানতে তারা যেকোনো পরীক্ষা করতেই পারেন। কিন্তু শুধু পেটে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে তা জানার উদ্দেশ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা বা ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত, মাতৃগর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা সম্পর্কে ইতোপূর্বেই আইনে নিষেধ করা হয়। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আজ সোমবার থেকে এটি তাদের নতুন নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করল।