মাদক কারবারির কাছে গাঁজা বিক্রি করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক হয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) এক কর্মকর্তাসহ দুই সদস্য। পরে তাদের র্যাব-পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় জনতা।
সোমবার সকালে বরিশাল নগরীর পলাশপুরের মোহাম্মদপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের এসআই ওবায়েদুল্লাহ খান ও সিপাহি মো. সবুর।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের জানান, সকালে আমাদের কাউনিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা জানতে পারে স্থানীয় জনতা পলাশপুর কলোনির লোকজন ৫ নম্বর গলিতে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুজন সদস্যকে আটকে রেখেছেন।
তিনি বলেন, কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ও পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের এসআই ওবায়েদুল্লাহ খান ও সিপাহি মো. সবুর সকালে মোটরসাইকেলযোগে সিভিল পোশাকে পলাশপুরে যান। তখন তারা ব্যাগে করে আনুমানিক দেড় কেজি গাঁজা বিক্রির জন্য মাদক কারবারি সোহাগ ওরফে কানা সোহাগের কাছে যান।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, এর আগেও আটককৃতরা পলাশপুরের মাদক কারবারিদের সঙ্গে মাদক ক্রয়-বিক্রয় করতেন; যা স্থানীয়রা জানতে পেরে সকাল ৬টার দিকে গাঁজা বিক্রির সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ওই দুই সদস্যকে আটক করেন। পরে তাদের কাছ থেকে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা উদ্ধার করে এবং থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের খবর দেন। পরে র্যাব ও থানা পুলিশের সদস্যরা ওই দুইজনকে কাউনিয়া থানায় নিয়ে আসেন। পরে এ বিষয়ে জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে মোহাম্মদপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন সদস্যদের সঙ্গে পলাশপুর ও মোহাম্মদপুরের মাদক কারবারিদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এর সূত্র ধরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কয়েকজন তাদের সঙ্গে মাদক সংক্রান্ত লেনদেনও করে। অথচ তল্লাশির নামে এখানেই সাধারণ মানুষকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা হয়রানি করতেন; যা নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত ছিলেন। সকালে গাঁজা বিক্রির সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের স্থানীয়রা হাতে-নাতে আটক করে এবং সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। পরে তাদের মারধর করে র্যাব-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
তবে এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেউ গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।