ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অপার সংস্কারের আশা জাগিয়ে গত ৮ আগস্ট গঠিত হয়েছিলো অন্তর্বর্তী সরকার। গত ৮ নভেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ওই সরকারের তিন মাস পূরণ হয়েছে। এই তিন মাসে দেশবাসীর স্বপ্নপূরণে কী কী উদ্যোগ নেয়া হলো? সেগুলোর কতোগুলো বাস্তবায়িত হলো? বাস্তবায়নের পথেইবা এখন কতোগুলো উদ্যোগ? দেশবাসী প্রশ্ন তোলার আগেই এসব হিসাবের চুলচেরা বিশ্লেষণের চেষ্টা খোদ সরকারই করে দিয়েছে। গতকাল রোববার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো সরকারি হিসেবের শিক্ষা বিষয়ক নির্বাচিত অংশ দৈনিক আমাদের বার্তার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ইএফটিতে পাঠানো শুরু করে ভোগান্তি অবসানের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আসন্ন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহে আগের দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বানের জন্য চিঠি দিয়েছে এনসিটিবিকে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ দিয়েছে
নতুন ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারার। মন্ত্রণালয়ের কলেজ অনুবিভাগ ২৮তম হতে ৪২তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৭৪ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন সরকারি কলেজে পদায়ন করেছে। চেয়ারম্যান, মহাপরিচালকসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে ৯২৭ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদমর্যাদার ১ হাজার ২৮টি পদকে ৩য় গ্রেডের বেতনস্কেল উন্নীতকরণের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। গত ২০ আগস্ট পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচিত ১৯ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।দায়িত্ব নেয়ার প্রথম তিন মাসে এমন আরো অনেক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে অন্তর্বর্তী সকার। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে এসব অগ্রগতি ও অর্জন বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
নথি বিশ্লেষণে আরো দেখা গেছে, শিক্ষক-কর্মচারী ও সরকারি/বেসরকারি সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অনুদান দিতে অনুসরণীয় নীতিমালা (সংশোধিত-২০২৪) প্রণয়ন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভাতার হার পুনঃনির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কার্যক্রম ও বেতনভাতাদি প্রদান সংক্রান্ত কার্যক্রম অনলাইনে চালু করেছে। ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট অব মাদরাসা এডুকেশন স্কীমের আওতায় ৩২৫টি মাদরাসায় ভোকেশনাল কোর্স চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ।
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা অটোমেশন (ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা, ফলাফল ব্যবস্থাপনা, ফলাফল প্রকাশ, মার্কশিট ও সার্টিফিকেট প্রদান, অনলাইন ফি ইত্যাদি) এর কার্যক্রম নেয়া হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন মাদ্রাসাসমূহে কমিউনিকেটিভ ইংরেজি ও এরাবিক বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ইংরেজি ক্লাসে ইংরেজি ভাষায় ও এরাবিক ক্লাসে এরাবিক ভাষায় পাঠদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং বিএমটিটিআই-এর মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষকদের আরবি ও ইংরেজি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আরো একগুচ্ছ উন্নয়নের ফিরিসতি প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।