২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত তালেবান সরকার আফগানিস্তানে মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া ১৪ লাখ মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ করেছে। এতে দেশটির পুরো প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তালেবান সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার ইউনেস্কোর একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয়বারের মতো তালেবান ক্ষমতায় বসার পর আফগানিস্তানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের ভর্তিও হ্রাস পেয়েছে। গত তিন বছরে প্রাথমিক স্তরে ১১ লাখেরও কম ছেলেমেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছে।
ইউনেস্কো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, স্কুলের শিক্ষাবঞ্চিত এই শিশুদের ভবিষ্যৎ পরিণতি হবে ভয়াবহ। তারা এখন শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের শিকার হবে। মাত্র তিন বছরের মধ্যে তালেবান সরকার পুরো একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
ইউনেস্কো আরও জানিয়েছে, আফগানিস্তানে বর্তমানে কমপক্ষে ২৫ লাখ মেয়ে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত, যা স্কুলগামী মেয়েদের প্রায় ৮০ শতাংশ।
তিন বছর আগে আফগানিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে তালেবান। তবে তালেবান সরকারকে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশই স্বীকৃতি দেয়নি। তালেবানরা ক্ষমতায় বসার পরই নারীদের ওপর নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে। এটিকে ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ বলে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ। আফগানিস্তানই পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে মেয়েদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছে তালেবান।
ইউনেস্কো বলেছে, তালেবান সরকারের এই নীতির কারণে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মাধ্যমিক স্কুলের কমপক্ষে ১৪ লাখ মেয়ে শিক্ষাবঞ্চিত হয়েছে। আফগানিস্কানের শিক্ষাবঞ্চিত মেয়েদের নিয়ে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ জাতিসংঘ যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছিল, তা থেকে বর্তমান সংখ্যাটি ৩ লাখ বেশি।