জাতিসংঘের গবেষণার কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে। উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা বিশ্ব বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যায়কে হারিয়ে চাম্পিয়ন হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেহেরপুর বিল, ২০২৩ পাসের জন্য উপস্থাপনের পর বিরোধীদলের সদস্যরা জনমত যাচাইয়ে প্রস্তাবের আলোচনায় দেশের শিক্ষার মানের সামালোচনা করলে শিক্ষামন্ত্রী তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ডিপ্লোমা এবং শর্ট কোর্সগুলো বহিঃবিশ্বে বর্তমান যে বাজার চাহিদা সে অনুযায়ি করা হচ্ছে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় ৭০ ভাগ যেখানে আছে সেখানে আমাদের প্রচেষ্টাগুলোর মাধ্যমে একটা ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হবে। আমি আশা করি এক সময় যে ঢালাওভাবে বলা হতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ওখানে কোনো মান নেই, ওখানকার শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে কাজ পায় না। সেটি আর একেবারেই থাকবে না। স্কুল পর্যায়ে যে শিক্ষা সেটি এক সময় জ্ঞানভিত্তিক ছিলো সেটার সঙ্গে দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা মাধ্যমিক শিক্ষায় যে পরিবর্তনগুলো নিয়ে এনেছি, জাতিসংঘের গবেষণায়ও বেরিয়ে এসেছে দক্ষিণ এশয়িা মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে।
দীপু মনি বলেন, আমাদের উচ্চশিক্ষার মান কমেছে এটা আসলে কোনো গবেষণা করে কেউ বের করেছেন তেমন নয়। র্যাংকিংয়ের কথা বলা হয়েছে। র্যাংকিংয়ে কতগুলো বিষয় দেখা হয়। তার মধ্যে গবেষণা, বিদেশি শিক্ষার্থী, বিদেশি শিক্ষক, বিদেশের সঙ্গে এক্সচেঞ্চ- এ রকম অনেকগুলো বিষয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে আছে। র্যাংকিংয়ের দিকে কখনই নজর দেওয়া হয়নি। সেই কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। কিন্তু এখন আমরা র্যাংকিংয়ের দিকে নজর দিচ্ছি এবং খুব সম্প্রতি আমাদের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিক এবং প্রাইভেট র্যাংকিংয়ে অনেক নীচু থেকে উপরের দিকে ক্রমাগত উঠে আসছে গত দুই তিন বছরে। আমরা এগুলোয় নজর দেওয়ার ফলে বিশেষ করে গবেষণায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
মান পড়ে যাওয়া তো একদিনের ব্যাপার নয়। একটা লম্বা সময় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিলো। শিক্ষক নিয়োগে পুরোপুরি দলীয় বিবেচনায় এক সময় নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষকের কোনো যোগ্যতা দেখা হয়নি। শিক্ষায়, গবেষণায় কোনো বিনিয়োগ ছিলো না। উচ্চশিক্ষায় আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে। তার ফলাফল ইতোমধ্যে আপনারা কতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নানান ক্ষেত্রে যে তাদের অর্জন রয়েছে- দেখতে পারবেন। আমাদের উচ্চ শিক্ষার শিক্ষার্থীরা বিশ্ব যে ডিভেড কমপিটিশন আছে সেখানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যায়কেও হারিয়েও চাম্পিয়ন হচ্ছে। নাসার রোবটিক্সে চাম্পিয়নশিপে চাম্পিয়ন হয়ে আসছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। আমাদের শিক্ষার মান নেই এটি বোধহয় বলা সঠিক নয়। আমাদের ইউজিসির তদন্ত অনুযায়ি ব্যবস্থাগুলো নেওয়া হচ্ছে। সবক্ষেত্রে হয়তো সব ব্যবস্থা দেখা যায় না। কিন্তু অনেক ব্যবস্থাই এ পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে, আরও যেগুলো নেওয়া সম্ভব নেওয়া হবে।