রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন বা আন্দোলনের নামে মানুষ পোড়ানোর অধিকার কোনো রাজনৈতিক দলের নেই বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি মনে করে গণপরিবহনে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে গণতন্ত্র হয় না। বরং অগণতান্ত্রিক শক্তির বিকাশ হয়। ট্রেনে আগুন দিয়ে তিন বছরের শিশুসহ চারজনকে হত্যা, গণপরিবহণে আগুন, ট্রেন লাইন কাটা ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক ঘটনার প্রেক্ষিতে সব রাজনৈতিক মহলকে বিবেকহীন রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট ও জীবননাশের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানিয়েছে টিআইবি। ওইদিন ভোরে পর রাজধানীতে তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে একটি বগি থেকে মা, শিশুসন্তানসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনার উল্লেখ করে টিআইবি বলেছে, এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গণপরিবহনে প্রতিনিয়ত আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে। ট্রেনের লাইন কেটে ফেলা হচ্ছে। এসব ঘটনার মাধ্যমে কোনোভাবেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। ভোটের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে না।
মানুষ পুড়িয়ে কিসের রাজনীতি, এমন প্রশ্ন রেখে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতা মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি মূল্যবান হতে পারে না। মরদেহ নিয়ে রাজনীতির অধিকার কোনো রাজনৈতিক দলের নেই।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানবতা জিম্মি করে মানুষের লাশকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা বা দলীয় অ্যাজেন্ডা হাসিল করা এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠ গরম আর মাঠ দখলের নামে মানুষের জীবননাশের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, চলমান আন্দোলনের মধ্যে এসব ধারাবাহিক নৃশংসতার দায় আন্দোলনরত দলগুলো এড়াতে পারে না। আবার এর পেছনে সরকারি দলের মদদ রয়েছে বলে যে অভিযোগ, তা মিথ্যা হলে প্রমাণের দায়িত্ব সরকারের ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানেরও।
টিআইবি বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায় বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে। এতে বলা হয়, নৃশংসতার রাজনীতি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা বা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি আদায়ের পথ হতে পারে না। অন্যদিকে সহিংসতা প্রতিরোধের নামে বলপ্রয়োগ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করা, ঢালাও ধরপাকড়, বিনা বিচারে মানুষকে জেল খাটানো-কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।