পরীক্ষার মাঝে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় না থাকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো কোর্সের পরীক্ষা রেখে রুটিন সাজিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোও সরগরম। নতুন করে পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীদের।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে নিয়মিত/অনিয়মিত, প্রাইভেট, গ্রেড উন্নয়ন ও সিজিপিএ, এমএ, এমএসএস, এমবিএ, এমএসসি, এম মিউজ, আইসিটি শেষ পর্বের পরীক্ষা আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। চলবে ১১ মার্চ পর্যন্ত। নির্ধারিত তারিখ ও সূচি অনুযায়ী প্রতিদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় পরীক্ষা শুরু হবে। রুটিন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া মাস্টার্সের পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১১ মার্চ। এর মধ্যে প্রথম সপ্তাহে চারটি, দ্বিতীয় সপ্তাহে চারটি, তৃতীয় সপ্তাহে পাঁচটি এবং চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম দুই দিনে দুটি বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সব মিলিয়ে ২৩ দিনে শেষ হবে সব কোর্সের পরীক্ষা।
বিগত চার বছরের সূচি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিবছরই পরীক্ষার্থীরা প্রতিটি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কয়েকদিন করে ছুটি পেয়েছেন। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষা হয়েছিল ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ৫২ দিন, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষা হয়েছে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ১০ মে থেকে ১৫ জুন ৩৭ দিন, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষা হয়েছে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ ৩৭ দিন, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের পরীক্ষা হয়েছে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুন থেকে ৫ আগস্ট ৪৫ দিন। কিন্তু আসন্ন পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা সেই সময় পাবেন না জেনেই ক্ষোভ জানিয়েছেন।
টঙ্গী সরকারি কলেজের মাস্টার্সের পরীক্ষার্থী নাফিসা আতিক জানান, এক বছরের মাস্টার্স শেষ করতে ৩ বছর লাগিয়ে দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এখন প্রতিদিন পরীক্ষা দেওয়া আমাদের জন্য খুবই কঠিন হবে।
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী রিফাত আহমেদ বাবু বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে রুটিন দিয়েছে, সেখানে চার ঘণ্টা পরীক্ষা দিয়ে এসে একজন শিক্ষার্থী কখনোই পরের দিনের প্রস্তুতি নিতে পারবে না। তাই রুটিন পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আগে সপ্তাহে ছয় দিন, এমনকি রোজার মধ্যেও পরীক্ষা হতো। এখন সেটি সম্ভব নয়।
আগে শনিবার বন্ধ ছিল, এখন শুক্র ও শনিবার দুদিন বন্ধ থাকে। ৭ মার্চ থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের বন্ধ থাকবে। এইচএসসি পরীক্ষা উপলক্ষে জুন মাসে আরও দেড় মাস বন্ধ রাখতে হবে। মাস্টার্সের পরীক্ষা ছাড়াও অনার্স ও ডিগ্রির কয়েকটি পরীক্ষা হবে। সূচির সময়সীমার মধ্যে পরীক্ষা নিতে না পারলে এটি চলে যাবে এপ্রিলের পরে। সেজন্যই মাস্টার্সের পরীক্ষার সময় সংকুচিত করতে হয়েছে। এর ফলে সপ্তাহে পাঁচ দিনই পরীক্ষা হবে।