বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার দেখিয়েছে ডিবি।
এ বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, আমরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছিলাম। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবারের ঘটনায় তাদের নির্দেশদাতা হিসেবে গ্রেফতার করেছি।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ২টার দিকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশের উপর একটি বর্বরোচিত হামলা হয়েছে। ককটেল নিক্ষেপ করেছে এবং জানমালের ক্ষতি করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অপরাধটা হচ্ছে আসলে, এই অপরাধসমূহের উসকানিদাতা, পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে।
বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান।
তিনি বলেন, রাত ৩টার পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে তার উত্তরার বাসা থেকে এবং ৩টা ২০ মিনিটে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে তার শাহজাহানপুরের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়।
বিএনপির আর কোনো কেন্দ্রীয় নেতা নজরদারিতে রয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা সবকিছু খেয়াল রাখছি। কেউ যদি আরও এমন অপরাধ করে তারা আমাদের নজরদারিতে থাকবে এবং তাদের বিষয়েও আমরা ব্যবস্থা নেবো।
বিএনপির গণসমাবেশ আয়োজনের জন্য নতুন কোন মাঠের জন্য আবেদন করেছে কি না জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল আমাদের সঙ্গে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সভা হয়েছিল। সেই সভায় দুটি স্থানের কথা বলেছে। কিন্তু তারা আজকে যে আবেদনটি নিয়ে এসেছে, সেটি হলো গোলাপবাগ মাঠের কথা তারা বলেছেন। সেটা আমাদের ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের কাছে উপস্থাপন করবো।
এরও আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে বিএনপির প্রতিনিধি দল ডিএমপি সদর দপ্তরে যায়। সেখানে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন তারা।
বৈঠকে ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার জন্য রাজধানীর কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠের জন্য অনুমতি চায় বিএনপি। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে বিএনপিকে মিরপুরে সরকারি বাঙলা কলেজ মাঠে গণসমাবেশ করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৯টায় ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু।
এরপর রাতেই গণসমাবেশের সম্ভাব্য স্থান মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ মাঠ পরিদর্শন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারপরই আসে ফখরুল ও আব্বাসকে আটকের খবর।
তারও আগে বুধবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের। সেখানে নিহত হন মকবুল নামে বিএনপির এক কর্মী। আহত হন অন্তত ২০ জন। এ ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয় প্রায় ৪০০ নেতাকর্মীকে। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।