মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা একাট্টা : ভাঙনের শঙ্কা খোদ প্রেসিডেন্টের - দৈনিকশিক্ষা

মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা একাট্টা : ভাঙনের শঙ্কা খোদ প্রেসিডেন্টের

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

সেনাবিরোধী সংঘর্ষে আবারও উত্তপ্ত মিয়ানমার। দেশটির উত্তরাংশে সেনা বনাম সেনাবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ইতোমধ্যেই ঘরছাড়া হয়েছেন ৫০ হাজার মানুষ।

মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা আপাতত মূল ঘাঁটি গড়ে তুলেছেন শান প্রদেশে। সেখানে সেনা পরিচালিত সরকারকে কার্যত উপেক্ষা করেই একের পর এক সামরিক ঘাঁটির দখল নিচ্ছেন তাঁরা।

এমনকি চীনের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। মিয়ানমারে রাজনৈতিক ওঠাপড়া সম্পর্কে যাঁরা ওয়াকিবহাল, তাঁদের একটি বড় অংশের মত, গত দু’বছরে কখনো এতোটা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি সামরিক সরকারকে।

মিয়ানমারের সামরিক সরকারের কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে ঘটনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে সম্প্রতি জানিয়েছেন, যদি সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে গোটা দেশটা বিভক্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরকারের বিড়ম্বনা আরও বেড়েছে, কারণ শান প্রদেশের তিনটি সশস্ত্র গোষ্ঠী দূরত্ব ভুলে সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সামরিক সরকার নিযুক্ত কর্মকর্তাদের বেছে বেছে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।

কিছু দিন আগে শান প্রদেশেই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আউঙ কোয়াও লুইন বিদ্রোহীদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন। প্রত্যাঘাতের অঙ্গ হিসাবে পাল্টা হামলার আশ্রয় নিলেও নিজেদের হারানো জমি এখনো পুনরুদ্ধার করতে পারেনি সেনা পরিচালিত জুন্টা সরকার।

যে তিনটি সরকার-বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে, সেগুলো হলো- ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি, তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি এবং আরাকান আর্মি।

এই তিন বাহিনী হাত মিলিয়েছে মিয়ানমারের স্বঘোষিত গণতান্ত্রিক সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের সঙ্গে। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় মসনদ থেকে সেনা পরিচালিত সরকারকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করার দাবি তুলেছে তারা।

তবে তাদের লক্ষ্য শুধু এখানেই থেমে নেই। বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই সরকার বিরোধী সামরিক গোষ্ঠীগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাকে আরও প্রসারিত করতে চায়। তেমনটা হলে অস্বস্তি বাড়বে চীনেরও। কারণ, চীন আপাতভাবে মিয়ানমারের জুন্টা সরকারের সমর্থক দেশ হিসাবেই পরিচিত। তাই চলতি গৃহযুদ্ধে চীনা নাগরিকদের লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহীরা।

বেইজিংয়ের তরফেও তা অস্বীকার করা হয়নি। কিন্তু একটি সূত্রের খবর, জুন্টা সরকারের একাধিক কার্যকলাপে অসন্তুষ্ট চীন। বিদ্রোহীদের ঘাঁটি শান প্রদেশে মাদক চোরাচালানকে রুখতে পারেনি মিয়ানমারের সামরিক সরকার। সে কারণেই এই বিদ্রোহ বলে মনে করে বেজিং।

মিয়ানমারের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ভারতও। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে, ভারত ও মিয়ানমার সরকারের মধ্যে সাক্ষরিত ‘ফ্রি মুভমেন্ট’ চুক্তি অনুযায়ী, মিয়ানমার থেকে প্রায় বিনা বাধায় ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোতে ঢুকতেন মিয়ানমারের নাগরিকেরা।

মণিপুরে গোষ্ঠী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর অবশ্য এই ‘ফ্রি মুভমেন্ট’ চুক্তি স্থগিত রাখে ভারত। বিদ্রোহীদের দমন করতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই ভারত সীমান্তের কাছে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমানহানা চালায় জুন্টা সরকার।

২০২০-র নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী সু চি-র দল। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই সেনা অভ্যুত্থান হয় মিয়ানমারে। সে বছর ১ ফেব্রুয়ারি সু চি-সহ বহু গণতন্ত্রকামী নেতা-নেত্রীকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী।

দেশে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে একাধিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলেও সেইসব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমন করে জুন্টা সরকার। তবে দেশের সব জায়গায় সমান নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারেনি তারা। তবে এ বার কার্যত পশ্চাদপসরণ করতে দেখা যাচ্ছে তাদের। সূত্র: আনন্দবাজার 

 

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044848918914795