আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সীমান্তের ওপারের সাংবাদিকদের অবদান অনেক। ত্রিপুরার আগরতলায় থাকা সাংবাদিকরা হয়ে ওঠেন যোদ্ধা। সে সময় সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরার আগরতলা ছিলো ওয়ার ক্যাপিটাল (যুদ্ধকালীন রাজধানী) এই কারণে সেখানের সাংবাদিকদের দায়িত্ব ছিলো অনেক বেশি। উল্লেখ করা দরকার, ২৫ মার্চ ঢাকার ঘটনা অস্পষ্টভাবে সীমান্তের ওপারে পৌঁছে।
এপার থেকে যাওয়া সাংবাদিক, আগরতলার সাংবাদিক ও বিদেশি সাংবাদিকদের হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। এপার থেকে যাওয়া স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিল্পী, সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষদের সহযোগিতায় আগরতলার সাংবাদিকেরা এগিয়ে আসেন। মুক্তিবাহিনীর সেক্টর কমান্ডাররা আগরতলায় গেলেই সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের কথা বার্তা হতো।
সাপ্তাহিক সংবাদপত্রগলোও পিছিয়ে থাকেনি। এপার থেকে আগরতলায় যাওয়া সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী, সন্তোষ গুপ্তসহ অন্যান্যরা সবসময় আগরতলার সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ভুমিকা রাখেন। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ওয়ার ক্যাপিটাল আগরতলার চিত্রি সাংবাদিকরাও পিছিয়ে ছিলেন না। দুটি সংবাদপত্রের অফিসে জরুরিভিক্তিতে টেলিপ্রিন্টার মেশিন বসানো হয়। চিত্র সাংবাদিকরাও পিছিয়ে ছিলেন না। তারাও সবসময় তৎপর থাকতেন। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় ত্রিপুরার আগরতলার ছাত্র সমাজ তরুণ যুব সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে আসেন। আগরতোলার প্রেসক্লাবের ভুমিকাও কম ছিলো না। সংবাদ আদান-প্রদানের আরেকটি কেন্দ্রবিন্দু ছিলো আগরতলা প্রেস ক্লাব। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আগরতলার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়। যারা উপস্থিত হতে পারেননি তারা পরে বাংলাদেশে আসেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আগরতলার সাংবাদিকদের ভুমিকা ও অবদান ভোলার ভুলার নয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাদের ভুমিকা ও অবদান আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি ইতিহাস।লেখক : ওয়ালিউর রহমান বাবু