প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়টি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে উঠছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। কোটা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে, নাকি রাষ্ট্রপক্ষের আপিলে কোটা স্থগিত হবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় দুই পক্ষই। কোটার পক্ষে-বিপক্ষে জোরালো অবস্থান আইনজ্ঞদেরও।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হয়। গত ৫ জুন হাইকোর্টের রায়ে সেই কোটা পদ্ধতি পুনর্বহাল হয়। চেম্বার আদালতও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় আবারও আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি কোটার পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরাও প্রস্তুত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিলের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের বিরুদ্ধে শুনানি করতে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী বলছেন, ৫ বছর আগে সরকার ভুল করলেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান পুনর্বহাল করেছে হাইকোর্ট। আপিলেও তা অক্ষুণ্ন থাকবে।
কোটাপক্ষের আইনজীবী মোতাহার হোসাইন সাজু বলেন, জীবনবাজি রেখে যারা মুক্তিযুদ্ধ করছে তাঁদের সন্তানেরা সেই সুবিধা পাবে। তাদের নাতি-নাতনি যারা আছে তাঁরাও সেই সুবিধা পাবে। ১৩তম গ্রেডের ওপরে যারা তাঁদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বহাল রাখা হয়েছে। তাহলে ৯ থেকে ১৩ গ্রেড পর্যন্ত তাঁরা কেন বঞ্চিত হবে।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান বলেন, ৪ জুলাই আপিল বিভাগে এ নিয়ে শুনানি হবে। শুনানিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত হোক বা না হোক। পরবর্তী প্রক্রিয়া পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট পেয়ে রেগুলার আপিল ফাইল করা হবে।
তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র আইনজীবী ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাকরির ক্ষেত্রে কোটা নয়, মেধার মূল্যায়ন বাড়ানো দরকার।
সুপ্রিমকোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, এই কোটা ব্যবস্থা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়াও ঠিক না। তাতে করে আগামী প্রজন্ম এই কোটার সুবিধা নিতে গিয়ে অনেকগুলো অনিয়ম হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি তাদের নাতি-দৌহিত্র সবাই এই সুবিধা পাবে এটিও কিন্তু যৌক্তিক নয়।
বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, জেলা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা রয়েছে।