মুন্সিগঞ্জে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। গেল ৪ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ শহরের সুপারমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শহরের উত্তর ইসলামপুরের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলকে (২২) গুলি করে হত্যার অভিযোগে এই মামলা করা হয়।
আজ শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজলের নানি শেফালি বেগম। এই মামলায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম।
এই মামলায় নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান মহিউদ্দিনের ছোট ভাই সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিস উজ্জামান, মুন্সীগঞ্জ ৩ আসনের সাবেক এমপি ফয়সাল বিপ্লব (২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে জানুয়ারি-আগস্ট ) ও মৃণাল কান্তি দাস (২০১৪-২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এমপি), মুন্সীগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিন রুমি রাজনকে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগের একদফা দাবিতে সুপার মার্কেট চত্বরে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। সে সময় মুন্সীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সপাদক সাজ্জাদ হোসেন সাগরের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডিপজলকে গুলি করা হয়। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। মামলার অন্য আসামিরা তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ করতে করতে তাঁরা সেই স্থান ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট শহরের সুপারমার্কেটে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে ৩ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন- রিয়াজুল ফরাজী (৩৮), মো. সজল (৩০) ও ডিপজল (১৯)। নিহতদের মধ্যে রিয়াজুল মৃত কাজী মতিনের ছেলে, সজল আলী আকবরের ছেলে ও ডিপজল সিরাজ সরদারের ছেলে। এরা সকলেই শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। এ ছাড়া এতে অন্তত ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক।