মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রিতে শিক্ষকদের ঘুম হারাম - দৈনিকশিক্ষা

মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রিতে শিক্ষকদের ঘুম হারাম

রুম্মান তূর্য |

রাজধানীর একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষিকা ইফ্ফাত (ছদ্মনাম) অপেক্ষায় আছেন কখন রাত গভীর হবে। গত কয়েকদিন চেষ্টা করেও তিনি তার শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তথ্য অর্ন্তভুক্ত করতে পারেননি। সহকর্মীর কাছে জানতে পেরেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন ও রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের জন্য তৈরি করা নৈপূণ্য অ্যাপে আগের দিন ভোর রাত চারটার দিকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা গেছে। তা শুনে গত দশ দিন চেষ্টা করেও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে না পারা এ শিক্ষক নির্ঘুম রাত কাটিয়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি করে সাবমিট দিয়ে দেখলেন, কোনো তথ্য নেই। 

শুধু ইফ্ফাত নন, দেশের বেশিরভাগ মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক স্কুলের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষকরাই নৈপূণ্য অ্যাপে তথ্য এন্ট্রি নিয়ে এমন বিড়ম্বনার শিকার। গত ৩০ নভেম্বর মূল্যায়ন কার্যক্রম শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পরেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি করা যায়নি। ফলে বেশিরভাগ স্কুল এখনো মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করতে পারেনি। 

রাজধানীর একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ তথ্য নিশ্চিত করে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, তথ্য এন্ট্রি করতে না পারায় রিপোর্ট কার্ড জেনারেট (প্রস্তুত) করা যায়নি। তাই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ফল দেয়া যায়নি। যদিও অষ্টম, নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ফল প্রকাশ করা হয়েছে। তবে নতুন শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করা যায়নি। 

শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর থেকে তথ্য এন্ট্রি শুরু হলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি। নৈপূণ্য অ্যাপের সার্ভার সিস্টেমে প্রবেশ করলে বলা হয়, সব প্রসেস ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করতে বলা হয়। আবার তথ্য এন্ট্রি করলেও তা হারিয়ে যায়। হেল্পলাইনে ফোন দিলেও কেউ ধরে না। ধরলেও বলে সমস্যা লিখে এসএমএস পাঠান। সে অনুযায়ী এসএমএস পাঠালেও সমাধান হয় না।

এ নিয়ে রাজধানীর এক শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, একবার তথ্য দিয়ে কিছুক্ষণ পর দেখি নেই। 

আর একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তারা ভুল দিলেন, না ঠিক দিলেন সে বিষয়টিও বোঝা যায় না। ফল প্রস্তুতের মতো সংবেদনশীল কাজ এভাবে যাচাই ছাড়া করা যায় না। আমরা কি করবো বুঝতে পারছি না। 

জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে চালুকৃত মূল্যায়ন পদ্ধতির তথ্য সংরক্ষণ ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের জন্য এটুআইয়ের কারিগরি সহায়তায় ‘নৈপুণ্য’ নামের অ্যাপটি উন্নয়ন করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় নৈপূণ্য অ্যাপ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। ওয়েবসাইটে দেয়া কেন্দ্রীয় হেল্প ডেস্ক নম্বরে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের কমান্ড দিলে একটি যান্ত্রিক কণ্ঠ বারবার বলতে থাকে, আমাদের সবগুলো লাইন এখন ব্যস্ত আছে। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন। 

যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় নৈপূণ্য অ্যাপের ঢাকা জেলার প্রতিনিধি ইসরাত জাহানের সঙ্গে। মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টার পর তার সাড়া মেলে। দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, সার্ভার এতো শিক্ষকের চাপ মনে হয় নিতে পারছে না। তথ্য হারিয়ে যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, তথ্য সংরক্ষণ করে তা সাবমিট দিয়ে শিক্ষকদের এগিয়ে যেতে হবে। তবে এ জটিলতার সমাধান কি সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি। 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও সুস্পষ্ট কোনো সমাধানের রাস্তা জানাতে পারেননি। মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নিজেদের প্রতিবন্ধকতার কারণে কোনো কোনো শিক্ষক হয়তো তথ্য দিতে পারছেন না। কিন্তু অনেকেই দিতে পারছেন। প্রতিদিনই আমাদের এখানে নতুন তথ্য এন্ট্রি করা হচ্ছে বলে দেখতে পাচ্ছি। যেসব শিক্ষক তথ্য এন্ট্রি করতে পারছেন না তাদের বলবো, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে এটুআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030481815338135