রাজধানীর মিরপুরে ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মেলা বসানো হয়েছে। এ মেলার কারণে আজ স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ১৩ এপ্রিল থেকে এক মাসের জন্য স্কুল মাঠে মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ বেনারশি মসলিন ও জামদানি সোসাইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এজন্য তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেয়। ঈদ আনন্দ ও বৈশাখি মেলার নামে এর আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের চিঠির একটি কপি গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন অব্যবহৃত মাঠে মেলার অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। অথচ মেলা কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করেই এ মেলা বসিয়েছে। তবে সরেজমিনে বিদ্যালয় সংলগ্ন অব্যবহৃত কোনো মাঠ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিন পুলিশ (ডিএমপি) ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এই মেলার অনুমোদন দিয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠির একটি কপিও গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে এসেছে।
শনিবার সরেজমিনে মিরপুর ২ নম্বর ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মেলার প্রবেশ পথের গেটে বাংলাদেশ বেনারশি মসলিন অ্যান্ড জামদানি সোসাইটির ব্যানার লাগানো। বিশাল আয়তনের মাঠের চারপাশে সারি সারি দোকান বসানো হয়েছে। এসব দোকানে খেলনা, শাড়ি, থ্রিপিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেখা যায়। মাঠের কয়েকটি স্থানে মাটি খুঁড়ে বিভিন্ন রাইডসও বসানো হয়েছে। দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকে। রাতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ টেনে মেলায় আলোকসজ্জা করা হয়।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মেলার কারণে রোববার (আজ) বিদ্যালয় খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অনেকে বলাবলি করছে মেলা শেষ হলে ১০ মে স্কুল খুলবে।
ন্যাশনাল বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের হিসাব রক্ষক মালেক মুুকুল বলেন, আমার জানা মতে স্কুল সংলগ্ন অব্যহৃত খালি মাঠ নেই। স্কুলের মাঠ একটাই। আর সেখানে মেলা বসেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়তো মেলা কর্তৃপক্ষ স্থান নিয়ে চালাকি করেছে। অব্যবহৃত খালি মাঠ তারা পাবে কোথায়। আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, রোববার (আজ) স্কুল খুলবে। ক্লাস হবে। মেলা হবে বিকালে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমদ হোসেন বলেন, মেলার ব্যাপারে আমি অবগত নই। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মেলার অনুমতি দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এখলাস উদ্দিন মোল্লা বলেন, মেলা সংক্রান্ত কোনো তথ্য পেতে হলে স্কুলে যোগাযোগ করতে হবে। আমি মেলা নিয়ে অবগত নই।
মেলার আয়োজক বাবুল বলেন, মেলার জন্য আমরা স্কুল ফান্ডে টাকা দিয়েছি। সেই রশিদ আমার কাছে আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষই বলেছে তাদের মাঠে মেলা করতে। স্কুল সংলগ্ন অব্যবহৃত খালি মাঠ কোনটা এটা তারাই বলতে পারবে।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ মেলার অনুমতি দিয়েছে। এখানে পুলিশের করার কিছু নেই।