চাকরি শেষ হওয়ার পরও অধ্যক্ষ পদে বহাল আছেন মো. শাহজাহান আলী। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ফাজিল মাদরাসায় কর্মরত। বয়স ষাট বছরের বেশি হলে অধ্যক্ষের দায়িত্ব ছাড়ার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। এদিকে নীতিমালায় সুযোগ না থাকলেও মাদরাসার গভর্নিং তাকে চুক্তিভিত্তিতে পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ এপ্রিল কয়ড়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলীর চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর পূর্ণ হয়। চাকুরি শেষ হলেও তিনি জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের ওপর দায়িত্ব হস্তান্তর না করে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। বেসরকারি মাদরাসার এমপিও নীতিমালায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ না থাকলেও গভর্নিং বডির সভাপতি অবৈধভাবে আবারো তাকে ৫ বছরের জন্য অধ্যক্ষ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
শিক্ষক ও অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দায়িত্ব পালনকালে মাদরাসায় বিভিন্ন খাতে একক আধিপত্য বিস্তার, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ওই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। একাধিকবার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও গভর্নিং বডির সদস্যরাও অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় প্রতিবারই ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন ওই অধ্যক্ষ। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তাকে স্বপদে বহাল রাখার পেছনে অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হলো অধ্যক্ষ নিজের মেয়ের জামাইকে অন্য মাদরাসা থেকে নিজ মাদরাসায় এনে অধ্যক্ষ পদে স্থায়ী নিয়োগ দেবেন। মাদরাসায় নিয়োগকৃত নিজের বড় ছেলেকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক করার মতো ষড়যন্ত্রও রয়েছে। এছাড়া ভুয়া নিয়োগে ছোট ছেলেকে অতিরিক্ত পদে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করানোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদরাসার সব শিক্ষকের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। পরে মহাপরিচালকের কাছে ভুল স্বীকার করে নীতিমালা বর্হিভুত তার ছেলের এমপিও বাতিল করে পরবর্তীতে বেতন ছাড় করান এই অধ্যক্ষ। পুনরায় ছেলেকে ওই পদে পূর্ণবহাল করার কৌশলে তিনি আরো ৫ বছর বেতন-ভাতাবিহীন চুক্তিভিত্তিক পদে অধ্যক্ষ পদে থাকতে চান।
অধ্যক্ষ শাহজাহান আলীর কাছে এসব অভিযোগের জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পদে থেকেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চুক্তিভিত্তিক অধ্যক্ষ পদে থাকার আবেদন করেছি। অনুমতি পাইনি।
জানতে চাইলে গভর্নিং বডির সভাপতি মো. মজির উদ্দিন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির একটি পরিপত্র দেখিয়ে অধ্যক্ষ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন বলে দাবি করেন। নিয়ম-বর্হিভুত কি-না জানতে চাইলে তিনি মুখ খোলেননি।
উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সামছুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, চুক্তিভিত্তিক অধ্যক্ষ পদের জন্য তিনি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। চাকরি শেষ হলে পদে থাকতে পারেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি নিয়ম বর্হিভুত বলে জানান।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. উজ্জল হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার বিরুদ্ধে ওই বিষয়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগের আলোকে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকতাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যবস্থা নেয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যাপার। আমি তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।