মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - দৈনিকশিক্ষা

মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ!

মাছুম বিল্লাহ |

পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ নিশ্চিতের দাবিতে সম্প্রতি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কিছু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনধারী। তারা নিজেদের এক থেকে ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী ফোরাম পরিচয় দেন। আমরা জেনেছি, তাদের দাবি আইনগতভাবে হালে পানি পায়নি। তারপরেও এই আন্দোলন নি:সন্দেহে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।

তাদের বক্তব্য, বর্তমানে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯৬ হাজারের অধিক শিক্ষক ঘাটতি নিরসনের লক্ষ্যে শূন্যপদ পূরণে পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক। সরকারি বিধি অনুযায়ী কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স অনূর্ধ্ব ৩৫ থাকা সত্ত্বেও আসন্ন পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার এক ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে। 

এদিকে সরাসরি নিয়োগের জন্য এনটিআরসিএ এর নেয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়, শুধু বেসরকারি কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার প্রাক-যোগ্যতা নির্ধারণী নিবন্ধন সনদ দিয়েই সরাসরি এমপিওভুক্ত শিক্ষক পদে নিয়োগ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। শুধু টাকা হাতিয়ে নেওয়াই নয়, গত সপ্তাহে ১ থেকে ১২তম নিবন্ধনধারীদের নিয়ে চেম্বার আদালত কী বলেছে সেই তথ্যটুকুও খোলাসা করেনি নিবন্ধনধারীদের কাছে। নির্বাহী বিভাগ বলে যে কিছু আছে সেটাও নিবন্ধনধারী ও শিক্ষক প্রত্যাশীদের প্রায় ভুলিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা হয়েছিলো। গত কয়েক বছর ধরে কথায় কথায় তাদেরকে আশ্বাস দেয়া হতো- অমুককে ডাকাবো, নিয়োগ দিয়ে দেবো ইত্যাদি। নিবন্ধন, শিক্ষক নিয়োগ ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এই চক্রটিকে ভুক্তভোগীদেরই চিহ্নিত করা প্রয়োজন। উপরন্তু চেম্বার আদালতের আদেশের পর ঈদ সামনে রেখে সর্বশেষ দাও মারাটাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উসকানি দিয়ে শিক্ষক চাকরি প্রত্যাশীদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলেও মনে করছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অনেকে। এ ধরনের আন্দোলনে নামা শিক্ষকদের ও শিক্ষক পদপ্রত্যাশীদের জন্য অবমাননাকর।

আমরা দেখেছি, মানববন্ধন ও প্রতিবাদের বিষয়ে শিক্ষক পদ প্রত্যাশীরা ফেসবুকে ঘোষণা দেন এবং সাংবাদিকদের জানান, শুধু এক থেকে ১২তম নয়, নতুন কৌশল হিসেবে ১৩, ১৪ ও ১৫তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাও সঙ্গে থাকবেন। সবার বয়সই ৩৫ এর নিচে।  কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। খুব বেশী হলে এক ডজন নিবন্ধনধারীকে মানববন্ধনে দেখা গেছে। যাদের প্রায় সবার বয়সই চল্লিশের ওপরে। একটা ব্যানার হাতে কয়েক মিনিট মাত্র দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এ সময়ই তারা মেয়াদোত্তীর্ণ সনদের ফটোকপিতে আগুন দেন। কিছু ভুইফোঁড় অনলাইন পত্রিকার নামধারী সাংবাদিক ও ইউটিউবার তাদের সহায়তা করেন বলেও জানা যায়। কিছু প্রচার মাধ্যমে শিক্ষক পদ প্রত্যাশীদের সনদ পোড়ানোর খবর প্রচার হওয়ায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এখন প্রশ্ন হলো, যারা ফটোকপি পুড়িয়ে মূল সনদ পোড়ানোর দাবি করতে পারেন। অবলীলায় মিথ্যা বলে প্রতারণা করতে পারেন, তাদের যদি মানবিক কারণেও চাকরি দেওয়া হয়, শিক্ষকতা জীবনে কী তারা প্রতারকই থাকবেন না? সার্টিফিকেট পোড়ানো আবেগের কাজ, শিক্ষক পদ প্রত্যাশীদের এটা মানায় না। 

লেখক : ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষক

একাদশ-দ্বাদশ বাংলা-ইংরেজির সিলেবাস প্রকাশ - dainik shiksha একাদশ-দ্বাদশ বাংলা-ইংরেজির সিলেবাস প্রকাশ ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঠুঁটো জগন্নাথ অধ্যাপকের পকেটে ৬০ লাখ টাকা - dainik shiksha ঠুঁটো জগন্নাথ অধ্যাপকের পকেটে ৬০ লাখ টাকা সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু - dainik shiksha সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু স্কুলে ভর্তি: সরকারিতে জোয়ার, বেসরকারিতে ভাটা - dainik shiksha স্কুলে ভর্তি: সরকারিতে জোয়ার, বেসরকারিতে ভাটা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা - dainik shiksha স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবি যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043389797210693