রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার ওই এলাকা অনেকটাই স্বাভাবিক ছিলো। যান চলাচলও করতে দেখা গেছে। চার দিন পর ঢাকা-চট্টগ্রামের এই রুট দিয়ে রাজধানীতে ঢুকেছে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের ট্রাকও।
এর আগে গত রোববার থেকে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে আন্দোলনকারীদের রাস্তা থেকে সরানো হয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, এবং নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় আন্দোলনকারীদের দেখা যায়নি।
সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা। এসব এলাকার সর্বত্র এখন শুধুই ধ্বংসলীলা।
আন্দোলনকারীরা যান চলাচল বন্ধ করতে বৈদ্যুতিক টাওয়ার, গাছের গুড়ি ও রোড ডিভাইডার তুলে রাস্তায় ফেলে রাখে। সেগুলো সরানোর কাজ করেছে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। অটোরিকশা বেশি চলছে। গণপরিবহন তেমন একটা দেখা যায়নি। বলা যায়, যাত্রাবাড়ী এলাকায় অটোরিকশার আধিপত্য।
মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও ভয় ও আতঙ্কে অনেকেই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায় ম্যানুয়ালি টোল নেয়া হচ্ছে। সাইনবোর্ড এলাকায় স্পিডবোট প্রস্ততকারী সংস্থা গোল্ডেন ফাইবার গ্লাস কোম্পানি লিমিটেডের বিদেশ থেকে আমদানি করা ৩৫টি স্পিডবোট ছিলো।
গত রোববার সকাল ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা তাদের শোরুমে আগুন দেয়। এতে সব স্পিডবোট পুড়ে যায়। এ ছাড়া কোম্পানিটির অফিস ভাঙচুর করে তারা।
জানতে চাইলে কোম্পানির অ্যাকাউন্টিং ম্যানেজার হারুনুর রশিদ আমাদের বার্তাকে বলেন, রোববার যখন সাইনবোর্ড এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়, তখন আমাদের শোরুমে তালা দেয়া ছিলো। প্রথমে গ্লাস ভেঙে শোরুমে ঢুকে পড়ে। শোরুম থেকে তিনটি স্পিডবোট সড়কে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ছাড়া শোরুমেও আগুন দেয় তারা। এতে আমাদের অন্তত ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের যাত্রাবাড়ী অংশে ঢাকা-সিলেট রুটের টোল প্লাজা এবং কাজলা এলাকায় অবস্থিত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের দুটি টোল প্লাজা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের হেড অব অপারেশন এরফান আমাদের বার্তাকে বলেন, স্বয়ংক্রিয় মেশিনগুলো ফ্রান্স থেকে আমদানি করতে হয়। তাই কবে নাগাদ কার্যক্রম শুরু করতে পারবো, তা বলা যাচ্ছে না। এখন আমরা ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছি।