কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে। কবির শেষ শয্যা হবে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল এ হাফিজ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, বাংলা একাডেমিতে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও জানান, দ্বিতীয় জানাজা রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মিরপুর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
কবি হেলাল হাফিজের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নেওয়া হবে না বলেও জানান দুলাল এ হাফিজ।
যদিও কবি হেলাল হাফিজ চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে মরণোত্তর ‘দেহদানের’ ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন। তিনি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারে দেহদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন।
মরণোত্তর দেহদান প্রসঙ্গে কবি বলেন, ‘আমার তো ইচ্ছে ছিল, এখনও ইচ্ছে- আমার দেহ চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে দান করে যাব। কিছু প্রিয়জন হয়ত আপত্তি তুলতে পারে। তুললেও আমি মনে করি, চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য আমার দেহদান করাই শ্রেয়।’
এর আগে, শুক্রবার দুপুরে সুপার হোম নামে শাহবাগের একটি হোস্টেলে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কবি হেলাল হাফিজ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পান তিনি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙ্ক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে।