নানা সমালোচনার মধ্যেই নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বৃহস্পতিবার রাতে আলাবামা রাজ্যে এই দণ্ড কার্যকর করা হয় কেনেথ ইউজিন স্মিথের (৫৮) বিরুদ্ধে, যা বিশ্বে প্রথম। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে এবং ফেডারেল আপিল আদালতে আপিল করলেও হেরে যান তিনি।
স্মিথের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে তা হবে একটি নিষ্ঠুর এবং অস্বাভাবিক শাস্তি। এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা হয়। কিন্তু সে চেষ্টায় কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়। মূলত ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এলিজাবেথ সেনেট নামে এক নারীকে হত্যায় অভিযুক্ত হওয়ার পর স্মিথের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সময় স্মিথ বলেন, ‘আজ রাতে আলাবামা কর্তৃপক্ষ মানবিকতাকে এক ধাপ পেছনে নিয়ে গেল।’ ঘটনাস্থলে স্মিথের স্ত্রী এবং অন্য স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভালোবাসা, শান্তি আর জ্যোতি নিয়ে আমি পৃথিবী ছাড়ছি। তোমাদের সবার জন্য ভালোবাসা থাকল।’
কারা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ৫৩ মিনিটের দিকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ সময় স্ট্রেচারের ওপর শোয়ায়ে স্মিথের মুখে মাস্ক ধরা হয়। যার ভিতর দিয়ে নাইট্রোজেন গ্যাসের প্রবাহ শুরু হতে থাকে। এ সময় তিনি হাসছিলেন। পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকিয়ে ‘আই লাভ ইউ’ চিহ্ন প্রদর্শন করেন। তারপর স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনা পর্যবেক্ষণ করার জন্য সেখানে ৫ জন সাংবাদিককে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ওই সাংবাদিকেরা বলেছেন, নাইট্রোজেন প্রয়োগের পরও কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্মিথের জ্ঞান ছিল। এরপর তিনি কাঁপতে থাকেন। দুই মিনিট পর্যন্ত তিনি স্ট্রেচারের ওপর গড়াগড়ি করতে থাকেন। এরপর কয়েক মিনিট ধরে তাকে গভীর শ্বাস নিতে দেখা যায়। পরে তার শ্বাসের গতি ধীর হয়ে আসে এবং তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন।
প্রসঙ্গত, নাইট্রোজেন গ্যাস দেহকোষকে ভেঙে ফেলে এবং তা থেকে হয় মৃত্যু। স্মিথের মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেছেন আলাবামার গভর্নর কে আইভি।