সারা দেশে কয়েক হাজার সরকারি-বেসরকারি কলেজ থাকলেও কিছু কলেজের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অনেক কলেজের বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার অর্থের বিনিময়ে কিছু কলেজের ‘ভালো ফল’ বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগও আছে। এমন মানহীন কলেজের চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য উঠে এসেছে দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে।
এসব কলেজ শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। তাই নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অজান্তে আবেদন করিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনোটিতে অবকাঠামো বলতে শুধু ক্লাসরুম। কখনো ভাড়াবাড়িতে, আবার কখনো বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের রুম ভাড়া করেও চলছে কোনো কোনো কলেজের ক্লাস। ভর্তির পরেও অনেক কলেজ ছেড়ে শিক্ষার্থীরা একে একে চলেও যাচ্ছে। টানা কয়েক শিক্ষাবর্ষে কাঙ্খিত শিক্ষার্থী পায়নি ক্লাসরুমসর্বস্ব এসব কলেজ।
প্রতিবছরই ন্যূনতম শিক্ষার্থী না পাওয়া এসব কলেজের তালিকা শিক্ষা বোর্ডগুলো তৈরি করলেও নানা চাপ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের মৌখিক নির্দেশে সর্বশেষ তালিকা তৈরি সম্ভব হয়নি। তবে দৈনিক আমাদের বার্তার আর্কাইভের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সুবিধার্থে শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজগুলোর পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হলো।
২০১৯ শিক্ষাবর্ষে কেউ ভতিই হয়নি রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার প্রাইম সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, মোহাম্মদপুরে ট্রিনিটি কলেজ, মতিঝিলের ওয়েস্টার্ন কলেজ, উত্তরার স্টামফোর্ড কলেজ, পদ্মকানন রোডের সেন্ট্রাল আইডিয়াল কলেজ, উত্তরার হলি চাইল্ড কলেজ, সাতমসজিদ রোডের ঢাকা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, গ্রীন রোডের আনোয়ার আইডিয়াল কলেজ, কেরানীগঞ্জের লাইসাম কলেজ, টঙ্গীর পূবাইল কমার্স কলেজ, ঢাকার নবাবগঞ্জের উপজেলার নবাবগঞ্জ পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজে।
একই শিক্ষাবর্ষে মাত্র একজন শিক্ষার্থী পায় রাজধানীর মিরপুর এলাকার খান ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, মোহাম্মদপুরের সানওয়ে স্কুল এন্ড কলেজ। সে বছর যাত্রাবাড়ী এলাকার নর্দান ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি কলেজে চার জন শিক্ষার্থী ছিলেন। সমসংখ্যক শিক্ষার্থী ছিলেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি কলেজে। পাঁচজন করে ছিলেন রাজধানীর মিরপুরের সরোজ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, নিকুঞ্জ এলাকার রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ, পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মেদিনীমন্ডল গার্লস কলেজে। মানিকগঞ্জের ডা. আব্দুর রহমান খান মহিলা কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন ৬ ছাত্রী।
একই শিক্ষাবর্ষে রাজধানীর মগবাজার এলাকার ন্যাশনাল ব্যাংক পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ ৯ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। বনশ্রী এলাকার নভেলটি স্কুল এন্ড কলেজ, রাজবাড়ীর জঙ্গল সম্মিলনী আদর্শ হাই স্কুল এন্ড কলেজে ছিলেন ১০ জন করে শিক্ষার্থী।
তেজগাঁও এলাকার সিভিল এভিয়েশন কলেজ ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে একজন শিক্ষার্থীও না পাওয়ায় ২০২০ শিক্ষাবর্ষে ফ্রি আবেদন করার প্রলোভন দেখায়।
শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজের তালিকায় আরও আছে- বাঁধন মাল্টিলিটারাল স্কুল এন্ড কলেজ, ধ্রুবসুর আদর্শ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, অক্সফোর্ড অ্যাকাডেমি, বড়গ্রাম হাই স্কুল এন্ড কলেজ, ভার্সেটাইল মডেল কলেজ, ট্যালেন্ট ক্যাম্পাস কলেজ, সিএসডি কলেজ, বৈকাল কলেজ, সমতা কলেজ, দ্যা অস্ট্রালেসিয়ান কলেজ, আল ফুরকান ইংলিশ হাই স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ, উত্তরা অন্বেষণ মডেল কলেজ, হলি ফ্লাওয়ার মডেল কলেজ, সিটি রয়েল কলেজ, হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা ইডেনবার্গ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, ন্যাশনাল গার্লস কলেজ, অক্সফোর্ডিয়ান ল্যাবরেটরি কলেজ, নিউ সৃষ্টি কলেজ, হলি ফ্যামিলি পাবলিক কলেজ, ঢাকা অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ, বর্ণমালা আইডিয়াল কলেজ, সাইনবোর্ড মডেল কলেজ, ধামরাই মডেল কলেজ এবং ন্যাশনাল রেসিডেন্সিয়াল কলেজ।