বছর ঘুরে আবারও চলে এলো পবিত্র রমজান মাস। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে মাহে রমজান শুরু হতে পারে। এরপর দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখাসহ বিভিন্ন ইবাদতে মশগুল থাকবেন বিশ্বের ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা।
বিশ্বব্যাপী সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময়ের মধ্যে তারতম্য হওয়ায় দেশ এবং অঞ্চলভেদে রোজা রাখার সময়ের মধ্যেও পার্থক্য দেখা যায়। বিশ্বের সবচেয়ে দক্ষিণভাগে যেসব মুসলিম বাস করেন, যেমন চিলি ও নিউজিল্যান্ডে, তারা গড়ে প্রায় ১২ ঘণ্টা রোজা রাখবেন। আর একেবারে উত্তরদিকে অবস্থিত দেশগুলোতে, যেমন আইসল্যান্ড অথবা গ্রিনল্যান্ডের মুসলিমদের ১৭ ঘণ্টারও বেশি সময় পানাহার থেকে দূরে থাকতে হবে।
জেনে নেওয়া যাক এবার কোন অঞ্চলের মানুষের সবচেয়ে বেশি সময় রোজা রাখতে হবে এবং কোন অঞ্চলের মানুষের কম সময় রোজা থাকতে হবে।
সবচেয়ে বেশি সময় রোজা থাকতে হবে
নুক, গ্রিনল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
রেকজাভিক, আইসল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
হেলেনস্কি, ফিনল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
স্টকহোম, সুইডেন: ১৭ ঘণ্টা
গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড: ১৭ ঘণ্টা
আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস: ১৬ ঘণ্টা
ওয়ারস, পোল্যান্ড: ১৬ ঘণ্টা
লন্ডন, যুক্তরাজ্য: ১৬ ঘণ্টা
আস্তানা, কাজাখস্তান: ১৬ ঘণ্টা
ব্রাসেলস, বেলজিয়াম: ১৬ ঘণ্টা
প্যারিস, ফ্রান্স: ১৫ ঘণ্টা
জুরিখ, সুইজারল্যান্ড: ১৫ ঘণ্টা
বুচারেস্ট, রোমানিয়া: ১৫ ঘণ্টা
অটোয়া, কানাডা: ১৫ ঘণ্টা
সোফিয়া, বুলগেরিয়া: ১৫ ঘণ্টা
রোম, ইতালি: ১৫ ঘণ্টা
মাদ্রিদ, স্পেন: ১৫ ঘণ্টা
সেরাজেভো, বসনিয়া: ১৫ ঘণ্টা
লিসবন, পর্তুগাল: ১৪ ঘণ্টা
অ্যাথেন্স, গ্রিস: ১৪ ঘণ্টা
বেইজিং, চীন: ১৪ ঘণ্টা
ওয়াশিংটন ডিসি, যুক্তরাষ্ট্র: ১৪ ঘণ্টা
পিয়ংইয়ং, উত্তর কোরিয়া: ১৪ ঘণ্টা
আঙ্কারা, তুরস্ক: ১৪ ঘণ্টা
রাবাত, মরক্কো: ১৪ ঘণ্টা
টোকিও, জাপান: ১৪ ঘণ্টা
ইসলামাবাদ, পাকিস্তান: ১৪ ঘণ্টা
কাবুল, আফগানিস্তান: ১৪ ঘণ্টা
তেহরান, ইরান: ১৪ ঘণ্টা
বাগদাদ, ইরাক: ১৪ ঘণ্টা
বৈরুত, লেবানন: ১৪ ঘণ্টা
দামাসকাস, সিরিয়া: ১৪ ঘণ্টা
কায়রো, মিসর: ১৪ ঘণ্টা
জেরুজালেম, ফিলিস্তিন: ১৪ ঘণ্টা
কুয়েত সিটি, কুয়েত: ১৪ ঘণ্টা
গাজা সিটি, ফিলিস্তিন: ১৪ ঘণ্টা
নয়া দিল্লি, ভারত: ১৪ ঘণ্টা
হংকং: ১৪ ঘণ্টা
ঢাকা, বাংলাদেশ: ১৪ ঘণ্টা
মাসকাট, ওমান: ১৪ ঘণ্টা
রিয়াদ, সৌদি আরব: ১৪ ঘণ্টা
দোহা, কাতার: ১৪ ঘণ্টা
দুবাই, আরব আমিরাত: ১৪ ঘণ্টা
আদেন, ইয়েমেন: ১৪ ঘণ্টা
কম সময় রোজা থাকতে হবে
আদ্দিস আবাবা, ইথিওপিয়া: ১৩ ঘণ্টা
দাকার, সেনেগাল: ১৩ ঘণ্টা
কলম্বো, শ্রীলঙ্কা: ১৩ ঘণ্টা
ব্যাংকক, থাইল্যান্ড: ১৩ ঘণ্টা
খারতুম, সুদান: ১৩ ঘণ্টা
কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
সিঙ্গাপুর: ১৩ ঘণ্টা
নাইরোবি, কেনিয়া: ১৩ ঘণ্টা
লুয়ান্ডা, অ্যাঙ্গোলা: ১৩ ঘণ্টা
জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া: ১৩ ঘণ্টা
ব্রাসিলিয়া, ব্রাজিল: ১৩ ঘণ্টা
হারারে, জিম্বাবুয়ে: ১৩ ঘণ্টা
জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩ ঘণ্টা
বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনা: ১২ ঘণ্টা
সিওদাদ দেল এস্তে, প্যারাগুয়ে: ১২ ঘণ্টা
কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা: ১২ ঘণ্টা
মন্তেভিদো, উরুগুয়ে: ১২ ঘণ্টা
ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া: ১২ ঘণ্টা
পুয়ের্ত মন্ত, চিলি: ১২ ঘণ্টা
ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড: ১২ ঘণ্টা
এদিকে যেসব মুসলিম পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে বাস করেন তারা গত বছরের তুলনায় এ বছর কম সময় রোজা রাখবেন এবং এদিকটায় সময়ের পরিধি আরও কমে আসবে। ২০৩১ সাল পর্যন্ত এটি কমতে থাকবে। এরপর আবার সময় বাড়বে। কিন্তু যেসব মানুষ বিষুব রেখার কাছে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে উল্টোটি হবে।
প্রতি বছর ভিন্ন সময়ে রমজান মাস শুরু হয় কেন?
পবিত্র রমজান মাস প্রতি বছর ১০ থেকে ১২ দিন আগে শুরু হয়। কারণ ইসলামিক ক্যালেন্ডার চন্দ্র হিজরি ক্যালেন্ডারের ওপর করে গণণা করা হয়। আরবি মাসগুলো ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন হয়।
যেহেতু সৌরবছর থেকে চন্দ্র বর্ষ ১১ দিন কম, সে কারণে ২০৩০ সালে দুইবার রমজান মাস পাওয়া যাবে। প্রথমটি শুরু হবে ৫ জানুয়ারি। দ্বিতীয় রমজানটি শুরু হবে একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর।
এছাড়া পৃথিবীর একবারে উত্তরাঞ্চল, যেমন নরওয়ের লঙ্কারবায়েন, যেখানে ২০ এপ্রিল থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত সূর্য অস্ত যায় না, সেসব অঞ্চলে সৌদি আরবের মক্কা অথবা কাছের কোনো মুসলিম দেশের সময় অনুযায়ী রোজা রাখার ব্যাপারে মত দিয়েছেন ইসলামিক স্কলাররা।
সূত্র : আল জাজিরা