বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম রংপুরে এসেছেন- এমন খবরে লাঠি মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।
শনিবার দুপুরে সেন্ট্রাল রোডের দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পায়রা চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
এদিন বেলা ১১টার দিকে রংপুর সফরে আসেন পুলিশ মহাপরিদর্শক ময়নুল ইসলাম। তার সফরসঙ্গী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমকে দেখা গেছে।
জাতীয় পার্টির প্রতিবাদ সমাবেশে দলটির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, বঙ্গভবনে উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম ধাপের সংলাপে জাতীয় পার্টি আমন্ত্রণ পেয়ে সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে মতামত দিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের কথায় পরবর্তী সংলাপে জাতীয় পার্টিকে ডাকা হয়নি, এটা হতাশাজনক। দুই-একজন ছাত্রের কথায় সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নেবে, এটা আমাদের প্রশ্ন।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টিকে সংলাপে প্রধান উপদেষ্টা ডাকবে কি ডাকবে না, সেটা তার ব্যাপার। এটা সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয় আসবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? হাসনাত-সারজিসের কথায় সরকার যদি জাতীয় পার্টির সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করে, সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও অনেক অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী পুলিশ প্রটোকল পাবেন কারা, সেটা সবাই জানে। কিন্তু এখন আমরা কী দেখছি? হাসনাত-সারজিসদের কেন প্রটোকল দিতে হবে? যেখানে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশি সেবা যাচ্ছে না, সেখানে তাদেরকে প্রটোকল দেওয়ার কারণ কী? আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে জাতীয় পার্টির কী ভূমিকা ছিল তা তুলে ধরতে গিয়ে দলটির নেতা মোস্তফা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সর্বপ্রথম ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা। যখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের হামলার ভয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বের হতে পারেননি, তখন জাতীয় পার্টিই মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল। রাজপথে থেকে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আমাদের পার্টির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। আন্দোলনে সহযোগিতা এবং পাশে থাকার কারণে আমাকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে আমাকে হেনস্থা করা হয়েছে। তার পরও কেন জাতীয় পার্টিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে?
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি, জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছিল। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের সফলতা কারো একার নয়। ১৮ কোটি মানুষের এই দেশ; কারো একার নয়, কারো বাবারও নয়।
এর আগে গত শুক্রবার রাতেও একই বিষয়ে নগরীতে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।