রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা রাখার প্রতিবাদে মানববন্ধন - দৈনিকশিক্ষা

রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা রাখার প্রতিবাদে মানববন্ধন

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : পবিত্র রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন ১০/১২ জন ব্যক্তি। রমজান মাসের প্রথমাংশে প্রাথমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলছেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে শিশু-কিশোরদের ধর্ম চর্চার মাধ্যমে নৈতিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রমজান জুড়ে বন্ধ থাকলেও স্কুল-কলেজ রমজানের ছুটি কেনো বাতিল হলো সে প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

ছবি : দৈনিক শিক্ষাডটকম

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এ মানববন্ধনে অভিভাবক পরিচয়দানকারীরা রোজায় স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার দাবি জানান। ‘সচেতন অভিভাবক মহল’ ব্যানারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে কয়েকজনকে জানতে চাওয়া হয় তাদের সন্তানরা কে কোন ক্লাসে বা স্কুলে পড়েন? জবাবে রাজধানীর সাতারকুল স্কুলের একজন শিক্ষক দাবি করেন তার সন্তান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েন।

জানা গেছে, প্রথম ও তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই সন্তানের অভিভাবক ও রাজধানীর সাতারকুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষক মুহাম্মদ জাইদুল ইসলামের উদ্যোগে ফেসবুকে যোগাযোগের মাধ্যমে সমমনা অভিভাবকরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে কয়েকজন অভিভাবক অংশ নেন। 

তারা বলছেন, বছরের শুরুতে ছুটির তালিকায় পুরো রমজান মাস ছুটির আওতায় রাখা হয়েছিলো। আমরা খুবই আশ্বস্ত ছিলাম যে, সন্তানরা রমজান মাসে ঠিকমতো সিয়াম সাধনা করতে পারবে। কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ জানানো হয় রমজানে স্কুল খোলা থাকবে। সিয়াম সাধনার মাসে এ সিদ্ধান্ত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের হতাশ করেছে। এর ফলে রোজাদার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মারত্মক কষ্টের সম্মুখীন হবেন, আর রোজাদারকে কষ্ট দেয়া চরম অমানবিকতা। 

অভিভাবক ও শিক্ষক মুহাম্মদ জাইদুল ইসলাম বলেন, আমি সন্তানদের ছোটবেলা থেকেই রোজা রাখতে উৎসাহিত করি। কারণ রোজার মাধ্যমে মানুষের মাঝে নৈতিক গুণাবলী তৈরি হয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে সন্তানদের চরিত্র গঠন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ সময় সন্তানদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ করে দেয়া দরকার। কিন্তু রমজানে বাচ্চাদের নৈতিকতা চর্চার সুযোগ না দিয়ে যদি ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয় তবে তারা নৈতিকতা শিখবে কিভাবে? রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস, ক্লাস পরীক্ষার নয়। তিনি আরো বলেন, নতুন প্রজন্ম রমজানে ক্লাস খুলে যতোই লেখাপড়া করুক, তাদের নৈতিক চরিত্র যদি উন্নত না হয় তবে তাদের দিয়ে দেশ ও জাতি কোনো উপকার পাবে না। 

একটি সময় রমজানের প্রথম পনেরো দিন স্কুল খোলা রাখা থাকতো। তখন রামজানে স্কুল বন্ধ রাখার দাবি শোনা না গেলেও এখন কোনো রাজপথে মানববন্ধন হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ জাইদুল ইসলাম বলেন, রমজান আসলে বছরের একটি সময়ে হয় না। কিছু দিন করে এগিয়ে আসে। একটি সময় হয়তো কোনো বিশেষ কারণে রমজানের শুরুতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হতো। আমি নিজেও রোজায় অনার্স পরীক্ষা দিয়েছি, কিন্তু রোজায় গ্যাপ দিয়ে দিয়ে পরীক্ষা হয়েছিলো। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে রমজানে স্কুল বন্ধ ছিলো। রমজানে স্কুল-কলেজ খোলা রাখা হলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হবে। ফলে রাজধানীবাসী শিক্ষার্থী ও তাদের স্কুল-কলেজে নেয়া আনায় নিয়োজিত অভিভাবকরা দুর্বিষহ কষ্টের মুখোমুখী হবেন। 

তিনি বলেন, গত বছর রমজানে পহেলা বৈশাখ পরেছিলো, তখন ছিলো প্রচন্ড গরম। সে সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মঙ্গলশোভাযাত্রা আয়োজনের নির্দেশনা দেয়া হলে আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের নির্দেশনা বাতিল করে। আমরা আশা করছি এবারও সরকার বিষয়ে বুঝতে পেরে রমজানের পুরো মাসের ছুটি বহাল রাখবে।

মানববন্ধনে মুহাম্মদ ফারুক নামের অপর একজন বলেন, রমজানে আল্লাহ মানুষকে ভালো কাজের সুযোগ দেন, কিন্তু ভালো কাজের না দিয়ে যদি তাকে ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যস্ত রাখা হয় তাহলে সে চরিত্রগঠন করবে কিভাবে? অনেকে বলে, নতুন প্রজন্ম নাকি অসুস্থ প্রজন্ম হিসেবে গড়ে উঠছে। শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা চর্চায় বাধা দেয়া অসুস্থ প্রজন্ম তৈরির মূল কারণ। 

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী মোহাম্মদ পাভেল বলেন, আসন্ন রমজান মাস জুড়ে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। কিন্তু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো খোলা থাকবে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই কি শুধু মুসলমান? রমজানে তারাই কি শুধু ছুটি পাবেন? প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কি মুসলমান নয়? প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরাও যদি মুসলমান হয় তাহলে তাদের ছুটি কেনো বাতিল করা হলো? করোনার সময় দুই বছর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় কোনো সমস্যা হয় না, কিন্তু রোজার ১০-১৫ দিন ক্লাস বন্ধ রাখলে লেখাপড়ার বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে-এমন যুক্তি কখনোই গ্রহণযোগ্য না। 

হাবিবুর রহমান নামে অপর মানববন্ধনকারী বলেন, যারা রমজানে স্কুল খোলা রাখতে চায় তারা কখনোই শিক্ষার্থীদের ভালো চায় না। 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078499317169189