দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুরের আমদানি শুল্ক কমাল সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপন জারির পর রাজধানীর পাইকারি বাজারে পাম তেল ও সয়াবিন তেলের দাম উল্টো মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, শুল্ক কমানোর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, প্রয়োজনে জরুরি আইন প্রয়োগ করে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপনে ভোজ্যতেল আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ১৫ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ, খেজুরে ২৫ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। চাল আমদানিতে শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৫ শতাংশ। আর অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক টনপ্রতি তিন হাজার টাকা থেকে কমিয়ে এক হাজার এবং পরিশোধিত চিনির শুল্ক ছয় হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে পাম তেল ও সয়াবিন তেলের দাম মণপ্রতি ৪০-৫০ টাকা বেড়েছে। বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক
হাজি আবুল হাসেম জানান, যে পরিমাণ শুল্ক কমানো হয়েছে, তাতে বাজারে প্রভাব পড়েনি। বরং পাম তেল ও সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেজুরে যে পরিমাণ শুল্ক কমানো হয়েছে, তাতে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। কারণ, খেজুরে শুল্কায়ন হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। কেনা দামে শুল্কায়ন করা গেলে ভোক্তার কিছুটা সুবিধা হতো।
তেল ও চিনির পরিশোধন মিলের কর্মকর্তারা জানান, চিনির ক্ষেত্রে শুল্ক কমানো হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০ পয়সা।
অথচ ১১২ টাকার ডলার এখন ১২৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাঁদের মতে, বর্তমানে যে শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে বাজারে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সরকার পণ্যের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। পণ্যমূল্য ভোক্তাদের নাগালে রাখতে আমদানি শুল্ক কমানো তারই প্রতিচ্ছবি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজনে জরুরি আইন প্রয়োগ করে বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এবার একটু আমাদের ওপর আস্থা রাখেন, আগে যেভাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলার পরও দাম কমেনি, সেটা আর হবে না। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’ তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে আমদানিকারক এবং উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে এই শুল্কের প্রভাব যাতে শিগগির বাজারে পড়ে, সেটা নিশ্চিত করা হবে।
আমদানিকারকদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্দরে থাকা পণ্য দ্রুত খালাস করে বাজারজাত শুরু করুন, যাতে শুল্ক কমানোর সুবিধা সাধারণ ভোক্তা পায়।’