দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি: ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রেখেছেন তাঁরা। রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের নিশ্চয়তা না পেলে পরীক্ষার হলে ফিরবেন না তাঁরা। অন্যদিকে, চলমান আন্দোলনের ফলে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা কাটাতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গতকাল বুধবার দুপুরে বুয়েটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ ও নববর্ষ মিলিয়ে ১৩ দিন ছুটির পর আনুষ্ঠানিকভাবে বুয়েট ক্যাম্পাস খুললেও ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। এদিন ২১তম ব্যাচের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বুধবারের পরীক্ষায় ব্যাচের ১ হাজার ২৭৯ জনের মধ্যে মাত্র ৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। তাঁদের ৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের মহড়াকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে নামেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। পরে ৬ দফা দাবি জানান তাঁরা। জানা গেছে, এই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে কেউ কিছু না বললেও ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের দাবি এবং তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গত মঙ্গলবার বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমানকে তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আসন্ন একাডেমিক ও আইনি চ্যালেঞ্জ সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা হবে বলে জানিয়েছেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল জব্বার খান। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন, ‘ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের ওপর আস্থা রাখে। বর্তমান প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীরা যখনই অভিযোগ জানিয়েছে, আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আদালতের আদেশ
বুয়েট কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো হাতে পায়নি। আদালত আদেশে কী জানতে চান, সেই অনুযায়ী উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
অধ্যাপক আব্দুল জব্বার খান আরও বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে থাকার কোনো সুযোগ নেই।’ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর সাংগঠনিক রাজনীতি বন্ধের যে বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছিল, বর্তমান প্রশাসন সেই বিজ্ঞপ্তির পক্ষেই অবস্থান নেবে বলেই জানান তিনি।
আইনি প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে উপ-উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটা পক্ষ হিসেবে আইনি প্রক্রিয়ায় যাবে, আমরা শিক্ষার্থীদের জানিয়েছি, তারাও যেন পক্ষভুক্ত হয়। তারা যদি তাদের পছন্দের আইনজীবী নিয়ে পক্ষভুক্ত হতে চায়, সেটাকেও আমরা সাধুবাদ জানাই।’ সাবেক শিক্ষার্থীদেরও আইনি লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উপ-উপাচার্য এ সময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাই, তারা যেন ১৯ তারিখে পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেটাতে না হলে ২২ তারিখে যেন নেয়। আগামী ৮ তারিখ পর্যন্ত আমরা আহ্বান জানিয়ে যাব।’