ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাল্যায়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুল ফাঁকি প্রাকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে সংসদ উপ-নির্বাচনে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে এক প্রার্থীর সঙ্গে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সময় তোলা ওই দুই শিক্ষকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা আফিসার বলছেন, এটি চাকরি বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হলেন, উপজেলার দস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান এবং উপদইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর নবী চঞ্চল।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯ বলা আছে, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের বা রাজনৈতিক দলের কোনো অঙ্গসংগঠনের সদস্য হতে অথবা অন্য কোনোভাবে যুক্ত হতে পারবেন না অথবা বাংলাদেশ বা বিদেশে কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বা কোনো প্রকারের সহায়তা করতে পারবেন না। এমন নির্দেশ থাকলেও আইন উপক্ষো করে পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক স্কুল ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে দলীয় কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যে অংশ নিচ্ছেন।
স্থানীয়ভাবে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি এবার ঠাকুরগাও-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী এক প্রার্থীর সঙ্গে গত বুধবার বিকালে ঢাকায় একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমাদানের সময় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন উপজেলার দস্তমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান এবং উপদইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর নবী চঞ্চল। দলীয় মনোনয়ন ফরম জমাদানের সময়কার তাদের ছবি এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর কর্মী হিসেবে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন ও প্রচার প্রচারনা চালিয়েছেন। রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে দেখা যায়।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আক্তারুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি কোন রাজনীতি করি না। স্কুল ফাঁকি দেইনা। ছুটি নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়েছিলাম। দলীয় কার্যালয়ে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। কে বা কারা আমার ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন, আমি জানি না।
সহকারী শিক্ষক নুরনবী চঞ্চল দাবি করেন, তিনি স্কুল ছুটি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য হিসেবে হয়ে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে গিয়েছিলাম। শিক্ষক হিসেবে নয়।
জানতে চাইলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহজাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আখতারুজ্জামান মৌখিকভাবে তাকে বলে ৫ দিনের জন্য ঢাকায় গিয়েছিলেন। দরখাস্ত দেননি। দলীয় কাজে শিক্ষকদের অংশ নেয়া বেআইনি।
শিক্ষকদের দলীয় কাজে অংশ নেওয়ার ছবি দেখালে উপজেলা শিক্ষা আফিসার হাবিবুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটি চাকরি বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকারি চাকরিজীবীরা এটা করতে পারে না। লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।