রাজপথে ধ্বংসাত্মক কাজ করলে আইন তার আপন গতিতে চলবে বলে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও পিএসসির প্রশ্নফাঁসের বেনিফিশিয়ারিদের খুঁজে পাওয়া গেলে চাকরি থাকবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে রোববার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সময়ের আলোচিত এ দুই বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেন।
কোটা আন্দোলনকারীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আদালত মানবে না। আইন মানবে না। সংবিধান মানবে না। তারাই তো ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে। সরকার কি ভাবে চলে তাদের তো জানা উচিত। তারা আদালতে যাক। কিন্তু তারা রাজপথেই সমাধান চায়। আদালত থেকে সমাধান না এলে রাজপথে আন্দোলন করছে, করতেই থাকবে। কিন্তু, পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙ্গচুর হলে আইন তার আপন গতিতে চলবে।
সরকার প্রধান বলেন, কোটের রায় হবে। এখন নির্বাহী বিভাগের তো কিছুই করার নেই। কিন্তু, তারা আন্দোলনে করছে। আন্দোলনে অনেক মেয়েও ছিলো। তারা বলেছে, নারী কোটা চাই না। তারা কি চাকরি পেয়েছে? আন্দোলন না করলে কোথাও না কোথাও তো চাকরি পেতো। বাংলাদেশে তো অনেক অনগ্রসর এলাকা আছে। গত কয়েক বছরের ফরেন ক্যাডারে মাত্র দুজন নারী চান্স পেয়েছে। আমাদের দেশের নারীরা কখনো সেক্রেটারি, ডিসি, এসপি হবে ভাবিনি। প্রথম নারী সচিব কিন্তু আমি করি। কোটা বিরোধীদের আগে তাদের পরীক্ষার রেজাল্টগুলো দেখে নেয়ার দরকার ছিলো।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এতো ক্ষোভ কেনো? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতী-পুতীরা চাকরি না পেলে কি রাজাকারদের নাতী-পুতীরা পাবে? মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন না করলে আজ তো লাত্থি খেয়ে চলতে হতো।
পিএসসির প্রশ্নফাঁস সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্ন যারা ফাঁস করে ও যারা কেনে উভয়েই অপরাধী। অন্যায় বা অবিচার যে করবে তাকে আমি ধরবোই। যখন ধরা পড়েছে, তদন্ত হবে, বিচার হবে। যারা বেনিফিশিয়ারি, যদি ধরা পড়ে, তাদের চাকরি থাকবে না। তাহলে ভবিষ্যতেই কেউ প্রশ্নফাঁস করবে না।
তিনি বলেন, ২৪তম বিসিএস পরীক্ষা যখন হয়, তখন কিন্তু পরীক্ষা-টরীক্ষা নয়, হাওয়া ভবন থেকে তালিকা পাঠানো হতো। সে অনুযায়ী চাকতি হতো। তা নিয়ে এখন উচ্চবাচ্য নেই। আমরা এগুলো ঠিক করেছি। ২০১৮ এর পর আবার কিছু কিছু মাথা চাড়া দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক চীন সফর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অধিকতর বিনিয়োগের আশ্বাস দিয়েছে চীন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ সমালোচকদের জন্য করুণা হয়। কিছু দিন আগে ভারত সফর করলাম। তখন বলা হলো, ভারতের কাছে সব কিছু বেচে দিয়েছি। দেশ বিক্রি করে এসেছি। তারপর চীনে গেলাম। তখন বললো, কিছুই দেয়নি। শুধু শুধু এমন সমালোচনা এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা। তাদের প্রতি করুণা হয়। দেশের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি যদি তাদের কোনো দায়িত্ব থাকতো- মুখ আছে বলে যাক। শুনলাম, গুণলাম না।