রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ‘অথরিটি’ (ডিন-সিন্ডিকেট) নির্বাচন নিয়ে দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা প্যানেল। এই সংগঠনের একটি পক্ষ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেও আরেকটি পক্ষ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে সাদা প্যানেলের একাংশ। এতে ৫৭ শিক্ষকের স্বাক্ষর রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১২ ডিসেম্বর শিক্ষক সমিতি ও অথরিটি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে এই নির্বাচন দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন সাদা প্যানেলের সদস্যরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সার্বিক দিক বিবেচনায় সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে ১৭ ডিসেম্বর। গতকাল বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ইতিমধ্যে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ প্যানেলের সদস্যরা ও সাদা প্যানেলের একাংশ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক এনামুল হক বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তাঁকে কল দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করেছেন। সেই সিদ্ধান্ত শিক্ষক ফোরামের সদস্যদের জানালেও তাঁরা মানেননি।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য একটি নমিনেটিং বোর্ড করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক দিক বিবেচনায় ১৭ ডিসেম্বর নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করেন। এই সিদ্ধান্তটি কার্যনির্বাহী কমিটির দুজন মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা এই তারিখে নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানান। তাঁদের পছন্দের প্রার্থী না পাওয়ায় তাঁরা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আর তাঁরা যে হাইকমান্ডের কথা বলছেন, এরকম কোন লিখিত ডকুমেন্টনস তাঁদের কাছে আসেনি। যদি তা আসে, তখন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাত শিক্ষককে বহিষ্কার করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। গত ৩০ নভেম্বর পৃথক পৃথক চিঠিতে এসব তথ্য জানায় ইউট্যাব।
বহিষ্কৃত সাত শিক্ষক হলেন, ইউট্যাবের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাসুদুল হাসান খান, সহসভাপতি খোন্দকার ইমামুল হক সানজিদ ও অধ্যাপক হাছানাত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক আনয়ারুল কবীর ভূঁইয়া, ড. সাবিরুজ্জামান, অধ্যাপক মতিয়ার রহমান ও অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম।