রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ( রাবি) স্কুলের প্রিন্সিপাল মো. শফিউল আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে স্কল শিক্ষক সমিতি।
এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে স্বাক্ষর করেন স্কুলের পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. খালেদুজ্জামানসহ ৫২ জন শিক্ষক ও পাঁচজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
সভায় শফিউল আলমকে অধ্যক্ষ পদে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা ছাড়াও তিনি ভবিষ্যতে কোনোভাবে স্কুলে অধ্যক্ষ হিসেবে প্রবেশের চেষ্টা করলে স্কুলের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম হতে বিরত থাকার এবং সিদ্ধান্তটি রাবি প্রশাসনকে অবহিত ও ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের সহকারী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, অধ্যক্ষ শফিউল আলম দায়িত্বে থাকাকালে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে নানা ধরণের দুর্ব্যবহার করেছেন। তার আর্থিক বিষয়ে অস্বচ্ছতা রয়েছে এবং তার নিয়োগ প্রক্রিয়াও প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝেও রাজনীতিকরণের চেষ্টা করেছেন। যা আমাদের শিক্ষার পরিবেশকে চরমভাবে ব্যাহত করে। এছাড়া চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আমাদের শিক্ষার্থীরাও গ্রেপ্তার হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে তিনি কোনো ধরণের ভূমিকা নেয়নি। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর আমাদের মন্তব্য করা থেকেও তিনি বিরত থাকতে বলেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ শফিউল আলমের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার স্ত্রী রাবি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানুর সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, অনিয়মের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এসবের কোন তথ্য প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না। তারা আর্থিক কেলেঙ্কারির কথা বলছে যার কোন প্রমাণ তারাই দিতে পারেনি৷ ওনার নিয়োগ যে অবৈধ তার কাছে কোন ডকুমেন্টস আছে? তারা যে অভিযোগ তুলেছে তার প্রমাণ দিতে পারলে আমি নিজেও মেনে সব নিব। কিন্তু তাদের কাছে কোন প্রমাণ বা তথ্য নেই। এমনি এমনি একজন মানুষকে হেনস্তা করার তো মানে হয় না। নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় নিজে। সেখানে উপাচার্যসহ আইইআর এর ডিরেক্টররা থাকেন। সেই নিয়োগ প্রোপারলি হয়েছিল সন্দেহ নেই।
তিনি আরও জানান, একজন প্রিন্সিপাল হিসেবে যেসব শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা নেয় না এবং ছাত্রদের সাথে ভালো ব্যবহার করে না সেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনি খুব স্ট্রিক্ট। যার ফলে সবার সাথে সবসময় ভাল ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। যারা ক্লাসে প্রাইভেট পড়ায় তাদের উপর তিনি খুব ক্ষিপ্ত ছিলেন। কারণ তারা প্রাইভেটে প্রশ্ন ফাঁস ও নম্বর বাড়িয়ে দেওয়ার মতো কাজ করে থাকেন। মূলত এসব কারণেই একদল শিক্ষক তাকে শত্রু মনে করে।