শীতকে বরণ করে নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আয়োজন করা হয়েছে ‘শীত আগমনী উৎসব-১৪২৯’। এ উৎসবের আয়োজন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চারুকলা প্রাঙ্গণে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হুমায়ুন কবির। উদ্বোধন শেষে শীতলপাটি উন্মোচনসহ নকশীকাঁথা সেলাই করেন উপ-উপাচার্য। পরে সূর্যমুখী বাগান, পদ্ম পুকুরসহ বাহারি পিঠা নিয়ে বসা স্টলগুলো পরিদর্শন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অনুষদ ঘুরে দেখা যায়, ঢেঁকির ডামি, কারুকার্যে সজ্জিত সূর্যমুখী ফুলের বাগান, অতিথি পাখি সজ্জিত বটগাছ এবং পুকুর খনন করে পদ্ম পুকুর তৈরি করেছে শিক্ষার্থীরা। সেখানে বিভিন্ন কৃত্রিম ফুল রাখা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিল্পীদের রংয়ের ছোঁয়ায় নতুন রূপ পেয়েছে চারুকলা অনুষদের মুক্তমঞ্চ।
বাঙালি ঐতিহ্যকে ধারণ করতে এ উৎসবে বসানো হয়েছে সাতটি স্টল। এতে পাওয়া যাচ্ছে বাহারি সব পিঠা। চারুকলা শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি নকশীকাঁথা, হ্যান্ড পেইন্ট শাড়ি, হ্যান্ড পেইন্ট চাদর, কাঠের গহনা, হ্যান্ড ব্লকের পাঞ্জাবি, হ্যান্ড পেইন্টের বিজয় দিবসে উত্তরীয়, মাটির আসবাব পত্র, ফুলদানি, বেতের ঝুড়ি, পাটের ব্যাগ, কাঠের তৈরি গহনা, হ্যান্ড পেইন্টের স্কার্ফ ও ওড়না, বিভিন্ন রকম চুরি, কানের দুলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। স্বল্প মূল্যে এসব বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন স্টল নিয়ে বসা শিক্ষার্থীরা।
আরিন্দা নামে এক স্টল নিয়ে বসেছেন গ্রাফিক ডিজাইন অ্যান্ড ক্রাফটস অ্যান্ড হিস্টোরি অফ আর্টস বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আরুবা তাসনিম অর্থী। তিনি বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই আমরা এ উৎসবের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশিয় শিল্পকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সিল্ক বাংলাদেশে ঐতিহ্যবাহী পণ্য। সিল্ক ও মসলিনের তৈরি বিভিন্ন শাড়ি, স্কার্ফ, মাফলার নিয়ে আমরা স্টল বসিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদে শীত আগমনী উৎসব দেখতে আসা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রনি আহমেদ বলেন, বাংলা সংস্কৃতির বিষয়ে শুধু কাগজে কলমে পড়ি। আজকে বাংলার সংস্কৃতিকে নিজে চোখে কিছুটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। গাছে গাছে অতিথি পাখির মেলা, পদ্ম পুকুর ও সূর্যমুখী চত্বর সবগুলোতেই বাঙ্গালীর সংস্কৃতি ধারা। খুবই ভালো লাগছে এ উৎসবে আসতে পেরে।
ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক এম তারেক নূর বলেন, এ আয়োজনের মাধ্যমে শীতকে বরণ করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাঙালি হিসেবে বাঙালির সংস্কৃতি ধারণ করা আমাদের কর্তব্য। হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সামনে তুলে ধরার জন্য চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাই। এমন উৎসব শুধু এবার নয় প্রতিবার চালু থাকা প্রয়োজন।