রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পিএম সফিকুল ইসলামকে একদল লোক ‘ধরে নিয়ে মারধর করার পর’ পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শনিবার বিকালে নগরীর সাধুরমোড় এলাকা থেকে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করা হয় বলে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ জানান।
সফিকুল ইসলাম বর্তমানে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের হেফাজতে আছেন জানিয়ে ওসি বলেন, তিনি সর্বশেষ নেত্রকোণা শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে ছিলেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর তিনি ঢাকাতেই ছিলেন বেশ কিছুদিন। সম্প্রতি নগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন কালু মিস্ত্রির মোড়ের নিজ বাড়িতে ফেরেন।
ইতোমধ্যে তাকে মারধারের একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানা যায়, শনিবার বিকালে সফিক বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে হাঁটছিলেন। স্থানীয় কিছু লোক তাকে চিনতে পেরে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তাকে মারধর করে আটকে রাখা হয় একটি মাঠের মধ্যে। খবর পেয়ে বিকাল ৫টার দিকে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, “ওই শিক্ষকের বাড়ি বাগমারা থানায়। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় কোনো মামলা মোকদ্দমা রয়েছে কিনা তা জানতে বাগমারা থানা পুলিশের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অন্য কোথাও কোনো অভিযোগ বা মামলা থাকলে তাও খোঁজা হচ্ছে।”
“সর্বোপরি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পাওয়ার পর সে অনুযায়ী তার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে,” বলেন ওসি মেহেদী।
সাবেক অধ্যাপক পিএম সফিকুল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন।
এছাড়া ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জানুয়ারির নির্বাচনে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও প্রগতিশীলপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল প্যানেলের সক্রিয় শিক্ষক নেতা ছিলেন।
এদিকে, পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় সফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আন্দোলনের সময় তিনি নেত্রকোণায় শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ছিলাম। তিনি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত নন। তার নামে কোনো মামলাও নেই বলে তিনি দাবি করেন।
তার দাবি, পাড়ার ছেলেরা তাকে আটকে রেখেছিলেন। তার কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল।
বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, “সফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করার সময় পুলিশের ওপর আক্রমণ হয়েছে; এটা হয়েই থাকে। তবে তার কাছে চাঁদা দাবির বিষয়টি আমরা জানি না।”