রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান ঢাকা থেকে প্রকল্প এলাকা পাবনার ঈশ্বরদীতে পৌঁছেছে।
আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঈশ্বরদী উপজেলার প্রবেশপথ মুলাডুলি এলাকায় পৌঁছায় ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো। দুপুর সোয়া একটায় গাড়িবহর রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
রূপপুর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ইউরেনিয়াম পরিবহনে বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িগুলো সড়কপথে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়ে ঢাকা থেকে যাত্রা করে। ভোর সাড়ে পাঁচটায় গাজীপুর মহানগরীতে প্রবেশ করে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সফিপুর এলাকায় পৌঁছালে একটি গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে মেরামত শেষে সকাল সাতটার দিকে গাড়িগুলো ছেড়ে যায়।
ইউরেনিয়ামের চালান পরিবহনকালে যানজটের সম্ভাবনা এড়াতে ঈশ্বরদী-ঢাকা সড়কপথে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী জানান, পাবনা-ঢাকা রুটের বঙ্গবন্ধু সেতুতে যানজট হয়। ইউরেনিয়াম বহনকারী যানবাহন আসতে সমস্যা হতে পারত। এ কারণে সড়কটি যানজটমুক্ত রাখতে শুক্রবার ভোর পাঁচটা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি বিশেষ বিমানে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়ামের এই চালান ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। আগামী ৫ অক্টোবর রূপপুর প্রকল্পে এ জ্বালানি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এ জ্বালানি হস্তান্তর করবেন।
রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে।
ইতোমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তৈরি করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার গাইড মেনে ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে প্রকল্পের কাজ। সংশ্লিষ্টরা জানান, ইউরেনিয়াম উৎপাদন ও পরিবহন থেকে শুরু করে বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম (ফুয়েল রড) স্থাপন করা পর্যন্ত পাঁচটি বিষয়ের প্রস্তুতি রয়েছে।
রূপপুরে পারমাণবিক কেন্দ্রে জ্বালানি পৌঁছানোর পর তা হস্তান্তর ও পরিচালনার সময় যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়েই জ্বালানি বিনিময় ও ব্যবস্থাপনা করার ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।