শতবর্ষী পুরনো কুমিল্লা লালমাই উপজেলাস্থ ‘আলীশহর’ রেলওয়ে স্টেশনটির আধুনিকায়নের কাজ শেষ হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। আশ্চর্যের বিষয় হলো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নান্দনিক এই স্টেশনটিতে শেষবারের মতো ট্রেন থেমেছিল এক যুগ আগে। চট্টগ্রাম-কুমিল্লা লাইনের স্টেশন হিসেবে আলীশহর রেলওয়ে স্টেশনটি তৈরি করা হলেও বর্তমানে তা বন্ধ থাকায় মিলছে না কোনো সেবা। জরুরি কক্ষগুলোতে ঝুলছে তালা।
ঐতিহ্যবাহী স্টেশনটি উপজেলার আলীশহর এলাকায় অবস্থিত। এ স্টেশন দিয়ে লাকসাম, লালমাই, কুমিল্লা, আখাউড়ার মধ্যে ট্রেন চলাচল করলেও এখানে কোনো ট্রেন বিরতি দেয় না। স্টেশনটিতে বর্তমানে পাহারায় রয়েছেন দু’জন নিরাপত্তারক্ষী। অসাধারণ কারুকাজ ও নকশায় তৈরি ঐতিহ্যবাহী স্টেশনটিতে রয়েছে মাস্টার রুম, ভিআইপি গেস্ট রুম, গেস্ট রুম, হল রুম ও সিগন্যালিং রুম। রয়েছে ছাউনিসহ নান্দনিক ফুটওভার ব্রিজ ও প্লাটফর্ম। তাই দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনা দেখতে প্রতিদিন বিকেলবেলা এখানে ভীড় জমে স্থানীয় দর্শনার্থীদের। প্লাটফর্মে বসে খোশগল্পে মেতে ওঠেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, এখানে দীর্ঘদিন ট্রেনসেবা বন্ধ থাকায় যাতায়াত ভোগান্তিতে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় তাদের এখন বেশি ভাড়া দিয়ে সড়কপথে চলাচল করতে হচ্ছে। ট্রেনসেবাটা চালু থাকলে এখানকার সাধারণ মানুষ যেমন সেবা পেত, তেমনি যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলওয়ে তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারত।
লাকসাম-আখাউড়া ৭২ কি.মি ডাবল লাইন মেগা প্রকল্পে সরকারের হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও ট্রেনের সুবিধা পায় না এখানকার মানুষ। যাত্রাবিরতি নেই রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কোনো আন্তঃনগর ট্রেনের। আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে যাতায়াতের জন্য এখানকার বাসিন্দাদের কুমিল্লা বা লাকসাম জংশনের ওপর নির্ভর করতে হয়।
তথ্যমতে, এই রেলপথ দিয়ে আলীশহর, চোখন্দী, দুর্লভপুর, উজালিয়া গ্রামের মানুষজন কৃষিকাজসহ নানা কাজে যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। কিন্তু এখানে কোনো গেইটম্যান না থাকার কারণে আমাদের পারাপার হতে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। নিজ দায়িত্বে এদিক ওদিক দেখে তারপর পার হতে হয়, তবুও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। এখানে একটা গেইট ও গেইটম্যান দিলে রেলপথ পার হতে মানুষের সুবিধা হয়।