লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের সেই ভয়াল ২৪ ডিসেম্বর আগামীকাল শনিবার। সে রাতে ঝালকাঠির মাঝ নদীতে লঞ্চে লাগা আগুনে বিভৎসভাবে পুড়ে এবং নদীতে ডুবে শিশু-নারী বৃদ্ধসহ ৪৯ জন। দগ্ধ হন অসংখ্য মানুষ।
ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান ১০ লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর অতিক্রম করছিলো রাত সাড়ে তিনটার দিকে। জেলা শহরের দখিন পাড়ের দিয়াকুল গ্রামে পৌছালে পুরো লঞ্চে আগুন লেগে যায়। নদীতে ভাসতে ভাসতে আগুনে পুড়ে শিশু-নারী পুরুষসহ লঞ্চের ৪৯ জনের প্রাণহানি হয়। দগ্ধদের অনেকে প্রাণ রক্ষায় নদীতে ঝাপিয়ে পড়েন। অনেক মরদেহ ১০ দিন ধরে নদী থেকে উদ্ধার হয়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন অনেকে। আহতদের অনেকে আজও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেনি। আগুনে বিভৎস হওয়ায় ২৫ জনের মরদেহ প্রথমে শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে ২৪ জনের বিকৃত মরদেহ ঝালকাঠি ও বরগুনায় বেওয়ারিশ করস্থানে দাফন করা হয়।
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চ মালিক হামজালালসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়। মামলার কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, অজ্ঞাত ২৪ মরদেহের ডিএন পরীক্ষা চলছে। এরমধ্যে ১৬ জনের মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। বাকি ৮জন শনাক্ত হলেই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিকে আদালতের নির্দেশে মালিক পক্ষের কাছে হস্তন্তর করা হয়েছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, বর্তমানে মামলা দুটি নৌ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার এবং তাদের আশ্রয় ও সেবা দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত রাখেন ঝালকাঠির লোকজন। বিশেষ করে দিয়াকুলের সাধারণ গ্রামবাসী। লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে অনেকের প্রাণ বাঁচান তারা। সেদিনের সেই ভেঁজা কাপড় আজও দিয়াকুল গ্রামে ভয়াল স্মৃতি হয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে। আর সেই রাতের কথা স্মরণ করে আজও শিউরে ওঠেন ঝালকাঠির মানুষ।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের নৌফায়ার স্টেশন না থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে এতো প্রাণহানি ঘটে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু এরপর এই এক বছরেও ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের নৌ-স্টেশন স্থাপন হয়নি।
জানতে চাইলে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম জানিয়েছে, নৌ-ফায়ার স্টেশন নির্মাণে কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।