লটারিতে গার্লস স্কুলে ভর্তির সুযোগ ছাত্রের - দৈনিকশিক্ষা

লটারিতে গার্লস স্কুলে ভর্তির সুযোগ ছাত্রের

বগুড়া প্রতিনিধি |

এ বছর বিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হচ্ছে লটারির মাধ্যমে। যাতে ইতোমধ্যে নানা ধরনের ত্রুটি দেখা গেছে। এরমধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়ায় একই ছাত্রী ৯ বার উত্তীর্ণ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে। আর বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে লটারিতে ভর্তির মেধা তালিকায় এক নামে তিন বার ভর্তির সুযোগ এসেছে এক শিক্ষার্থীর। 

এসব ঘটনার পর এবার যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পেয়েছে এক ছাত্র। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় লটারির ফল প্রকাশের পর বিষয়টি সবার নজরে আসে।

বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর এ নিয়ে নানা ধরনের মতামত লক্ষ করা গেছে। তবে, অভিভাবকরা একে এক ধরনের প্রতারণা বলে মনে করছেন। যাতে অনলাইনে লটারি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। 

সোমবার বিকাল ৫টায় দেশের ৫৪০টি সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারির ফল প্রকাশ করা হয়। লটারির মাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, মাত্র দুটি ছবি ব্যবহার করে এক ছাত্রী করোনেশন বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখায় আট বার এবং দিবা শাখায় এক বারসহ মোট ৯ বার চান্স পেয়েছে। তার নাম ভিন্ন ভিন্ন হলেও পিতার নাম অনিরুদ্ধ সরদার ও মায়ের নাম নিপা রায় বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলাফলের তালিকায় ওই ছাত্রীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে অনিন্দিতা সরদার আঁখি, অংকিতা সরদার নির্ঝর, অংকিতা সরদার। জন্ম নিবন্ধন নম্বরও ভিন্ন ভিন্ন। বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখার ফলাফল শিটে ওই ছাত্রীর সিরিয়াল নম্বর ১৯, ৩২, ৩৭, ৮১, ৮২, ৯০, ৯৩ ও ১০৮ নম্বর এবং দিবা শাখার সিরিয়াল নম্বর ২৫ অবস্থানে থেকে ভর্তির সুযোগ পায় ওই শিক্ষার্থী।

তবে আবেদনের সময় তার বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে দুটি। একটি নম্বর বন্ধ পাওয়া গেলে অপরটিতে কল করলে রিসিভকারীর নাম নিপা বললেও তার মেয়ে করোনেশন বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে বলে জানান তিনি। এ সময় তার মোবাইল নম্বর কীভাবে ভর্তি ফরমে এলো তা নিয়ে কিছুই জানেন না বলেও জানান তিনি।

স্কুল গেটে ফলাফল টানানোর পর বিষয়টি নজরে এলে অভিভাবকরা বলেন, এটা এক ধরনের প্রতারণা। এর ফলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো। এতে তাহলে স্বচ্ছতা থাকলো কোথায়? এ কার্যক্রমের মানে কি-এমন জিজ্ঞাসাও তাদের।

জেলা পর্যায়ে এ কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করেন জেলা প্রশাসকরা। এ বিষয়ে খুলনার জেলা প্রশাসক ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্ত করার পর জানা যাবে কেন এমনটি হয়েছে। এরপর তদন্তের ফলাফল সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আর খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ফারহানা নাজ জানান, এটি একটি বাজে দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকলো। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

খুলনা সরকারি করোনেশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকামী মাকসুদা বলেন, জেলা প্রশাসককে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হবে। এ ছাড়া এটি মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও জানানো হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের শিটে দেখা গেছে এক ছাত্রের নাম। ওই বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬০ জন শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশিত হলেও ৫৫ নম্বর সিরিয়ালে আব্দুল আহাদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। আব্দুল আহাদ মণিরামপুর পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। সে বর্তমানে প্রভাতী বিদ্যাপীঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।

গার্লস স্কুলে চান্স পাওয়া আব্দুল আহাদ জানিয়েছেন, তিনি তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান মাসুদের মাধ্যমে মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তার নাম এসেছে মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে।

আর এ নিয়ে জানতে চাইলে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবীর হোসেন পলাশ জানিয়েছেন, এটি কম্পিউটারের ভুল হতে পারে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে টেলিটকের ভর্তি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো শিক্ষার্থী আবেদনে লিঙ্গ নির্বাচনে ভুল করলে সে গার্লস স্কুলে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হতে পারেন। গত শিক্ষা বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রেও  এমনটি হয়েছে।

অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে - dainik shiksha অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে শিক্ষকদের বেতন সভাপতির একক স্বাক্ষরে জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ - dainik shiksha জোর করে পদত্যাগ, ভালো নেই স্ট্রোক করা সেই অধ্যক্ষ বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর - dainik shiksha বরিশালে থানায় শিক্ষার্থীদের হামলা-ভাঙচুর হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা - dainik shiksha হাজিরা মেশিন কাজে আসেনি ১৬৯ বিদ্যালয়ে, গচ্চা ৩৭ লাখ টাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল - dainik shiksha পদ্মার ভাঙনে বিলীনের শঙ্কায় দুই স্কুল কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045042037963867