‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’- এই প্রতিপাদ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় শুরু হচ্ছে মরমি সাধক ফকির লালন সাঁই স্মরণে তিন দিনব্যাপী উৎসব। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন অ্যাকাডেমির আয়োজনে শনিবার (৪ মার্চ) থেকে শুরু হয়ে এই উৎসব চলবে সোমবার (৬ মার্চ) পর্যন্ত। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে তিন দিনের এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
প্রথম দিনের প্রধান আলোচক কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শানিনুর রহমান এবং লালন মাজারের খাদেম মোহাম্মদ আলী শাহ।
এরই মধ্যে অনেক সাধু-বাউল আসতে শুরু করেছেন সাঁইজির ধামে। প্রতি বছরই অনুষ্ঠান শুরুর আগেই চলে আসেন তারা। এখানেই আত্মার শান্তি খোঁজেন সাধু-বাউলরা।
প্রতিবারের তুলনায় বেশি লোকসমাগম হবে উৎসবে। এমনটি ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে লালন অ্যাকাডেমি।
মাজারের খাদেম মোহাম্মদ আলী শাহ বলেন, ‘কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া গ্রামের এই আখড়াতেই ছিল ফকির লালন সাঁইজির প্রধান অবস্থান এবং এখানেই তার প্রয়াণ হয়। বর্তমানে এখানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে এবং গড়ে উঠেছে লালন অ্যাকাডেমি। এখানে ১৯৬২ সালে সমাধিসৌধ নির্মিত হয়েছে।’
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, এবার শবে বরাতের কারণে দুদিন এগিয়ে আনা হয়েছে অনুষ্ঠানমালা।
ঐতিহাসিক এই লালন উৎসব নির্বিঘ্ন করতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে আখড়া চত্বরে কালী নদীর তীরে মাঠে বসেছে ‘লালন মেলা’। লালন উৎসব শেষ হবে আগামী ৬ মার্চ রাতে।
উল্লেখ্য, ফকির লালন সাঁই তার জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এই আখড়ায় প্রতি বছর চৈত্রের দোলপূর্ণিমা রাতে শিষ্যদের নিয়ে সাধুসঙ্গ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন অনুসারীরা।