জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ১৫টি লিফট স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে দুই হলে ৯টি এবং দুই অনুষদ ভবনে ৬টি লিফট স্থাপন করা হয়।
কিন্তু শুরু থেকেই অধিকাংশ সময় অনুষদ ভবনের চারটি লিফট বন্ধ থাকে। এর মধ্যে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অচল বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা হলের একাধিক লিফট। এর বাইরে যেগুলো লিফট সচল রয়েছে, সেগুলো প্রায়ই চলন্ত অবস্থায় বিকল হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে বঙ্গবন্ধু হলের লিফটে উঠে আটকা পড়েন আবাসিক শিক্ষার্থী ওমর ফারুক, হুমায়ুন কবীর টুটুলসহ ৫ শিক্ষার্থী। এর প্রায় ২৫ মিনিট পর অপারেটর এসে উদ্ধার করে তাদের। এরপর ফেসবুক লাইভে এসে লিফটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন টুটুল।
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের লিফটে ৩৪ মিনিট ধরে আটকা ছিলেন ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর রানা। পরে সহপাঠী ও বিভাগীয় প্রধানের সহযোগিতায় লিফট থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। রানা বলেন, ইমার্জেন্সী বাটনে বারবার ক্লিক করেও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। লিফটে এতো পরিমাণে গরম, শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো। দরজায় জোরে ধাক্কা দিয়েও কারো কোনো সাড়াশব্দ পাইনি।
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাহা জানান, আমি ও আমার বিভাগের সিনিয়ররা লিফটে ২০ মিনিটের মতো আটকে ছিলাম। লাইটও বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। অনেক ভয় করছিলো, বাতাস প্রবেশ না করায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট লাগছিলো।
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শিশির বলেন, কখনো কখনো হলের ৪টা লিফটের মাঝে ৩ টাই বন্ধ থাকে। তখন অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ক্লাসের সময়গুলো এবং শুক্রবার দিন নামাজের আগে এই সমস্যা বেশি হয়। যারা নয়-দশ তলায় থাকে তাদের ঝামেলাতো আরও বেশি।
লিফট বারবার বিকল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, লিফটের প্রকল্প চলাকালীন সময়ে আমরা দায়িত্বে ছিলাম। এগুলোর সাথে এখন আমরা সংযুক্ত না। এগুলো পরিচালনার দায়িত্ব এখন প্রকৌশল দপ্তরের।
প্রকৌশল দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী (ইন্সট্রুমেন্ট) মিজানুর রহমান বলেন, লিফটে আটকানোর ঘটনা সব জায়গাতেই ঘটে। আমরা লিফট প্রোভাইডারদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে এটা ধীরে ধীরে কমবে। আমরা লিফটে ইন্টারকম ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছি। বাজেট স্বল্পতার জন্য এটা করতে দেরি হচ্ছে। ইন্টারকম চালু হয়ে গেলে কেউ আটকা পড়লে দ্রুত উদ্ধার করা যাবে।