ছেলেবেলায় লেখাপড়ার খরচ যোগাতে সংবাদপত্র বিলি করা ও গ্যাস স্টেশনে কাজসহ আরও অনেক ধরনের কাজ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বর্তমান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
চা উইথ পিটার শীর্ষক এক ভিডিওতে শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নিজের শৈশব সম্পর্কে এমন কথাই বলেন।
শৈশবের স্মরণীয় স্মৃতি কী প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।
এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, প্রশ্নটি ব্যক্তিগত। এটি আমাকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। তবে কঠিন হলেও আমি বলতে চাই।
চায়ের কাপ হাতে তিনি বলেন, আসলে আমি লেখাপড়ার ব্যয় মেটাতে আর প্রতিদিনের খরচ যোগাতে ছাত্রজীবনে নানা কাজ করেছি। সেগুলোর মধ্যে খবরের কাগজ বিলি করা, দারোয়ান, গামবল ফ্যাক্টরিতে সবার সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে গামবল গোছানোর মতো কাজও ছিল। এছাড়া একটি গ্যাস স্টেশনে মাঝরাতের শিফটে কাজও করতাম।
এই কাজগুলো তাকে অনেককিছু শিখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা, স্বাধীনতা, দায়িত্বজ্ঞানসহ বহুকিছু শিখেছি এসব কাজ করে। আর সে কারণেই এগুলো আমার শৈশবের স্মরণীয় স্মৃতি।
চা উইথ পিটার ভিডিও কনটেন্ট ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পেইজের একটি আয়োজন। বুধবার (৬ এপ্রিল) এর দ্বিতীয় সিজনের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়েছে। আর সেখানেই নিজের শৈশবের স্মৃতির কথা শুনিয়েছেন রাষ্ট্রদূত হাস।
এদিকে এই ভিডিও প্রকাশের পর মার্কিন রাষ্ট্রদূতের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেছে। এমনটাই দেখা গেছে ভিডিওটির কমেন্ট সেকশনে। বিশেষ করে তার এই স্মৃতিচারণ তরুণদের নিজের কাজের প্রতি আরও উৎসাহী এবং শ্রদ্ধাবোধ বাড়িয়ে দেবে বলেই মন্তব্য নেটিজনদের।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পিটার হাসকে চূড়ান্ত করেছে। সিনিয়র ফরেন সার্ভিসের মিনিস্টার -কাউন্সিলর মর্যাদার পেশাজীবী সদস্য মিস্টার হাস ইতোপূর্বে ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এবং একইসাথে অর্থনৈতিক ও ব্যবসা বিষয়ক ব্যুরোর প্রধান ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি বাণিজ্য নীতি ও সমঝোতা বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
মিস্টার হাস অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)-এর যুক্তরাষ্ট্র মিশনে শার্জে দ্য’ফেয়ার ও ডেপুটি পার্মানেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ, ভারতের মুম্বাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কনসুল জেনারেল এবং ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ইকোনোমিক কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি লন্ডন, রাবাত, ওয়াশিংটন, পোর্ট-অ-প্রিন্স ও বার্লিনে বিভিন্ন কূটনৈতিক পদে কর্মরত ছিলেন।
মিস্টার হাস ইলিনয় ওয়েসলিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এবং জার্মান ভাষায় বিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে মার্শাল স্কলার হিসেবে অংশগ্রহণ করেন এবং বিশ্ব অর্থনীতির রাজনীতি এবং তুলনামূলক সরকার উভয় বিষয়ে এমএসসি (অর্থনীতি) ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি স্টেট ডিপার্টমেন্টের জেমস ক্লেমেন্ট ডান পুরস্কার এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জন্য নির্ধারিত অর্থনৈতিক অর্জন বিষয়ক কর্ডেল হাল পুরস্কার পেয়েছেন।