শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের দেয়া সাম্প্রতিক এক বক্তব্যকে ‘তালেবানি’ বক্তব্য বলে আখ্যা দিয়েছেন দেশের ৩৪ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদের অপসারণ চেয়েছেন। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন তাঁরা।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয়, এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়) ওপেন কালচার ছিল, ছেলেমেয়েরা যা খুশি, তা-ই করতে পারত। কেউ কিছু বলতে পারত না। কারণ, তাদের বয়স ১৮ বছর। কিন্তু আমি বলেছি, রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হবে। তারা (শিক্ষার্থী) এটার নাম দিয়েছে তালেবানি কালচার। তালেবানি কালচার নিয়ে আমি খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়ে থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘তালেবানি কালচার নিয়ে তিনি গৌরবান্বিত এবং এটা নিয়েই তিনি থাকতে চান—এমন বক্তব্য একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে থাকা উপাচার্য কীভাবে সদর্পে উচ্চারণ করেছেন, সেটাই আমাদের জিজ্ঞাসা।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উপাচার্যের পদে থাকা একজন দায়িত্বশীল শিক্ষাবিদ হিসেবে এসব তথ্য তাঁর অজানা, তা বিশ্বাস করা যায় না। তাই তিনি যা বলেছেন, তা জেনেশুনে দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন বলে ‘মনে করা খুবই যুক্তিসংগত বলে আমরা মনে করি।’
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের বক্তব্যকে সাম্প্রদায়িক, অশালীন ও নারীবিদ্বেষী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে তাঁর অপসারণ দাবি করেন বিবৃতিদাতারা। অধ্যাপক ফরিদউদ্দিন আহমেদের মতো সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষী ব্যক্তিরা আর কোন কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন, তার একটি তালিকা প্রকাশের দাবিও জানানো হয় বিবৃতিতে। এতে স্বাক্ষর করেন হামিদা হোসেন, সুলতানা কামাল, রাাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবির, শিরীন হক, জেড আই খান পান্না, আনু মুহাম্মদ, ইফতেখারুজ্জামান, ফেরদৌস আজিম, সালমা আলী, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, রানা দাশগুপ্ত, শামসুল হুদা, স্বপন আদনান, সুমাইয়া খায়ের, রোবায়েত ফেরদৌস, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, নাসরিন খন্দকার, সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ, তবারক হোসেইন, রাহনুমা আহমেদ, শহিদুল আলম, সারা হোসেন, জাকির হোসেন, মো. আশরাফ আলী, মিনহাজুল হক চৌধুরী, শাহাদাত আলম, শুভ্র চক্রবর্তী, সাইদুর রহমান, নুর খান, জোবাইদা নাসরীন, দীপায়ন খীসা, হানা শামস আহমেদ প্রমুখ।
বেসরকারি সংগঠন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠান।