ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (শিক্ষা) নির্দেশ অমান্য করে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালে মানববন্ধনে অংশ নেয়া কতিপয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ। কলেজটির পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান সভাপতি ঢাকার এডিসি মমতাজ বেগম। আজ সোমবার সদ্যবিদায়ী সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ ও কলেজ অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদের বিরুদ্ধে ’ষড়যন্ত্রমূলক’ মানবন্ধন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিক শাখার শিক্ষক হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক। নারী শিক্ষার এ প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
শেরেবাংলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষক জানান, এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত প্রতিষ্ঠানটিতে চলমান ব্যবহারিক পরীক্ষা চলাকালে হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক দায়সারাভাবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আজ সোমবার সকাল ১০টার মধ্যেই কলেজ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। এরপর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন।
এসময় হামিদা খাতুনের নেতৃত্বে মানববন্ধনে যোগ না দেওয়া শিক্ষকদেরও কোনও কারণ ছাড়াই বরখাস্তের দাবি তোলেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মানবন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের নিয়োগ ও যোগদান যথাযথ প্রক্রিয়া হয়নি। তারা ২০০১ থেকে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত বলেও জানা যায়। নুসরাত জাহান, নাসরিন সুলতানা, আকলিমা আক্তার, রেখা মণ্ডল দিনা ও সৈয়দা মেহেনাজ নাইয়ার এই মানবন্ধনে অংশ নেন। তাদের নিয়োগ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের তদন্ত দাবি করেন কলেজটির শিক্ষকরা।
সরেজমিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে জানা যায়, শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেও দীর্ঘদিন আগে থেকেই অন্তরালে থাকা হামিদা খাতুনের এই শিক্ষক সিন্ডিকেটের গুটিকয়েক শিক্ষকই কেবল সেখানে অংশ নেন। হামিদা খাতুনের পরামর্শে ওইসব শিক্ষকরাই আবার তাদের স্বামী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের অভিভাবক সাজিয়ে মানববন্ধনে দাঁড় করান। সাবেক সভাপতি ও বর্তমান অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ দেখাতে বললেও তারা সাংবাদিকদের দেখাতে পারেননি। কোনো প্রশ্নেরও যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি। তাদের সন্তান ওই প্রতিষ্ঠানটির কোন শাখায় বা কোন ক্লাসে পড়ে তারও উত্তর মেলেনি। এসব প্রশ্ন শুনে তারা সটকে পড়েন।
বর্তমান গভর্নিং বডির প্রধান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমেদের অনুমতিপ্রাপ্তির বিষয়টি উপেক্ষা করেই এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির বর্তমান সভাপতি মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত ছিলাম না। পরে অবগত হয়েছি তারা (কতিপয় শিক্ষক) আমাদের অনুমতি ছাড়াই প্রতিষ্ঠানে ছিলেন না। মানবন্ধনে গিয়েছিলেন। কলেজে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি আমরা দেখব এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।