শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটির অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
মূলত মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন সনদধারী ও বসয়োত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগের আবদারের বিষয়টি খোলাসা করতেই এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। তবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ও নতুন কারিকুলামের ষাণ্মাষিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র ফাঁসের চলমান প্রেক্ষাপটে আসন্ন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি সামনে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা জানতে চান, শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে। এ ব্যাপারে এনটিআরসিএ কী করবে।
জবাবে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহিল আজম প্রশ্নফাঁসের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেন, শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কয়েকটি ধাপে করা হয়। সেখানে অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপকদের ডাকা হয় প্রশ্ন কবার জন্য। মডারেটর গ্রুপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র সিলগালা করা হয়। এরপর অন্য একটি মডারেশন গ্রুপ এসে ফাইনাল সিলগালা করে এবং তা বিজি প্রেসেও যথেষ্ট নিরাপত্তা সহকারে তা করা হয়।
তবে প্রশ্নফাঁসের খবর যতো রাতেই পাওয়া যাক ফোন দিয়ে তা এনটিআরসিএকে জানানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁসের খবরে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় মেয়াদোত্তীর্ণ নিবন্ধন সনদধারীদের সতর্ক করে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, লেবু বেশি চিপলে তিতা হয়। মেয়াদোত্তীর্ণদের অবৈধ দাবি মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নিবন্ধন সনদের মেয়াদ ইস্যুর তারিখ থেকে তিন বছর পর্যন্ত বহাল থাকবে। নিয়োগ সুপারিশের জন্য প্রার্থীদের বয়স হতে হবে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায় আছে। রায়ের বাইরে কোনো কিছু করার আইনগত সুযোগ নেই। এনটিআরসিএর ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের সংশোধিত পরীক্ষা বিধিতেও সনদের মেয়াদ তিনি বছর করা হয়েছে।
১ম থেকে ১২তম নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ থেকে শুধু প্রত্যয়নপত্র ইস্যু করা হতো জানিয়ে বলা হয়, নিয়োগের জন্য সুপারিশের দায়িত্ব তখন এনটিআরসিএর ছিলো না। সে সময়ে নিয়োগের দায়িত্ব ছিলো সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির। তাই ওই সনদপত্র কোনোভাবে চাকরির নিশ্চয়তা দেয় না। মেয়াদোত্তীর্ণদের নিয়োগের দাবিও যৌক্তিক নয়। কিন্তু, কিছু ব্যক্তি ও পেশাজীবী অসৎ উদ্দেশ্যে নিবন্ধিত প্রার্থীদেরকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে এনটিআরসিএর স্বাভাবিক কাজ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কিছু অর্থলোভী। তারা কমিটির মাধ্যমে চাঁদা তুলে এনটিআরসিএ তথা সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিছু ব্যক্তি (রিট ব্যবসায়ী আইনজীবী) প্রার্থীদের মামলায় জিতিয়ে দেয়ার টোপ দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করছে। কিন্তু, এনটিআরসিএ আইন-কানুন ও আদালতের আদেশ সম্পূর্ণভাবে প্রতিপালন করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক নিয়োগে বদ্ধ পরিকর।
সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন- এনটিআরসিএ সচিব ওবায়দুর রহমান, যুগ্ম-সচিব নূরে আলম সিদ্দিকী, পরিচালক কামরুল আহছান ও আবদুর রহমান প্রমুখ।