শিক্ষক নেতা শেখ কাওছারকে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিটিএর মানববন্ধন - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নেতা শেখ কাওছারকে বরখাস্তের প্রতিবাদে বিটিএর মানববন্ধন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আহমেদকে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষ পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের পেছনে জাতীয়করণ বিরোধীদের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) নেতারা। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম অনুর ‘ধারাবাহিক অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায়’ এ শিক্ষক নেতাকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা। 

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিটিএ নেতারা এসব অভিযোগ তেলোন। শেখ কাওছার আহমেদ বিটিএর সাধারণ সম্পাদক। তাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে বরখাস্তের প্রতিবাদে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।  

মানববন্ধনে বিটিএ নেতারা অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে এ দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন তারা। বিটিএ সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন। তবে বিটিএর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়াকে এসময় দেখা যায়নি। 

সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ, সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার, বেগম নূরুন্নাহার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবু জামিল মো. সেলিম, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন. সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগমসহ অন্যান্য নেতা।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকাস্থ যাত্রাবাড়ী থানাধীন সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে গত ১৩ নভেম্বর ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা মনে করি অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করার পেছনে বেসরকারি শিক্ষক সমাজের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বিগত ২২ দিনের সফল আন্দোলনের যারা বিরোধিতা করেছিলো তাদের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। 

শিক্ষক নেতারা বলেন, সম্প্রতি বিদ্যালয় অর্থায়নে ওই প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়। সেখানে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সভাপতি স্বজনপ্রীতি ও অনৈতিকভাবে পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ দেয়ার জন্য নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র পরিবর্তন করে নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষরিত নিয়োগপত্র দেয়ার বিধান থাকলেও সভাপতি নিজেই স্বাক্ষর করে নিয়োগপত্র প্রার্থীদের দিয়েছেন। ওই প্রতিষ্ঠানে বিধি মোতাবেক অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন, প্রতি অর্থবছরের সিএ ফার্মের করা নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের ২০১৫ এবং ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের দুটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন থাকা স্বত্ত্বেও সভাপতি ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমত একটি মনগড়া ‘উদ্দেশ প্রণোদিত’ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে এবং অফিস সহকারী মো. এনামুল হক খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশের জবাবে নিরীক্ষা প্রতিবেদনের মূল কপি চাওয়া স্বত্ত্বেও তা না দিয়ে বারবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে যাচ্ছেন এবং প্রায় একমাস যাবত অফিস সহকারী মো, এনামুল হক খানকে তার দাপ্তরিক কাজ করার জন্য অফিস কক্ষে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না। এমনকি তাকে ভয়-ভীতি ও হুমকি প্রদান করে অফিসের সকল আলমারি ও ফাইল কেবিনেটের চাবি জোর করে নিয়ে অফিস কক্ষের তালা পরিবর্তন করে নতুন তালা লাগিয়েছেন।

নেতারা আরো বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ফরম বিক্রি নিষেধ থাকা স্বত্ত্বেও সভাপতির নির্দেশে কোনো রশিদ ছাড়াই বগত দুই বছর ভর্তি ফরম বিক্রি করে ফরম প্রতি ২০০ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনুপস্থিতির জন্য রশিদ ছাড়াই জরিমানা ফি নিয়ে সভাপতি আত্মসাৎ করছেন। তাছাড়া বিদ্যালয়ের অর্থায়নে বিভিন্ন প্রকার উন্নয়ন কাজে সভাপতি নিজের আশির্বাদপুষ্ট লোক দিয়ে উপ-কমিটি গঠন করেন এবং কাজ শেষে বার বার তাগিদ দেয়া স্বত্ত্বেও বিল-ভাউচার দাখিল না করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অধ্যক্ষকে অসহযোগিতা করছেন। ফলে নিয়মিত ও সঠিকভাবে হিসাব-নিকাশ হালনাগাদ করা যাচ্ছে না।

তারা অভিযোগ তোলেন, অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী মোতাবেক প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ বিজ্ঞান বিভাগে ২ হাজার ১৪০ টাকা এবং মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২ হাজার ২০ ফি জমা দেয়ার নোটিশ দেয়া স্বত্ত্বেও সভাপতি ভিন্ন নোটিশ দিয়ে নিজের লোক অফিসে বসিয়ে প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৮ হাজার টাকার বেশি ফি নিয়েছেন। যার কোনো রশিদ দেয়া হয়নি এবং আদায়কৃত টাকা তিনি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে জমা না দিয়ে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিষ্ঠানের পানি ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠানের সামনে সভাপতি নিজের কেনা বাড়িতে সংযোগ দিয়েছেন। যার বিল প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে অবৈধভাবে নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে। সবুজ বিদ্যাপীঠ স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আবুল কালাম অনুর ধারাবাহিক অনৈতিক কাজে বাধা দেয়ায় অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। যার ফলে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারীরা উদ্বিগ্ন।

মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আহমেদকে অধ্যক্ষ পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদের ঝালকাঠি ও দিনাজপুরে মানবন্ধন করেছেন বিটিএর নেতারা। 

মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সামনে শিক্ষকবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) দিনাজপুর জেলা শাখা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। শিক্ষকবন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেন সংগঠনটির নেতরা। এতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বিটিএর দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মাতলুবুল মামুন, সিনিয়র সহসভাপতি মো. ফজলুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক লোকমান হাকিম, কোষাধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল হক, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসউদ আলম, ক্রিসেন্ট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম আজাদ, রাজারামপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসনা ইয়াসমিনসহ অনেকে। 

একই সময় ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সামনে বিটিএর ঝালকাঠি জেলা শাখার নেতারা শিক্ষকবন্ধনের আয়োজন করেন। এতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অংশ নেয়। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি মো. তোফাজ্জাল হোসেন, শিক্ষক সুনিল বড়ন হালদারসহ আরো অনেকে। পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন।

শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় বদলি ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি - dainik shiksha ডিআইএ পরিচালক কাজী কাইয়ুম শিশিরকে বদলি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা ঢাবিতে ভর্তি আবেদনের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha ঢাবিতে ভর্তি আবেদনের সময় বৃদ্ধি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ ই-রিকুইজিশনের সংশোধন অপশন চালু - dainik shiksha ই-রিকুইজিশনের সংশোধন অপশন চালু এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরো ১১ হাজার শিক্ষক পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন ২ হাজার ৯২৩ শিক্ষক - dainik shiksha উচ্চতর স্কেল পাচ্ছেন ২ হাজার ৯২৩ শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0042798519134521