নাটোরে অনুষ্ঠিত জাতীয় শিক্ষাক্রম রুপরেখা ২০২১ বাস্তবায়নে ৬দিনের শিক্ষক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের নিম্নমানের খাবার দিয়ে দুই লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শহরের নববিধান স্কুলে ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রশিক্ষণে সকাল-বিকালের নাস্তা ও নিম্নমানের দুপুরের খাবার নিয়ে অভিযোগ করেন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা। প্রশিক্ষক-প্রশিক্ষণার্থীদের খাবার বাবদ বরাদ্দে ২ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা।
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা থেকে নাটোরে প্রশিক্ষণ নিতে আশা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের সহকর্মীরা নওগাঁতে প্রশিক্ষণ নিয়ে দুপুরের খাবার ছাড়া সম্মানী পেয়েছেন ১৩ হাজার ৬৬৮টাকা আর আমরা নাটোরে প্রশিক্ষণ নিয়ে দুপুরের খাবার দিয়ে আমাদের ১২ হাজার ৩০টাকা দিয়েছেন নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আখতার হোসেন।
প্রশিক্ষণ নেয়া নাটোরের একাধিক প্রশিক্ষণার্থী দাবি করেছেন তাদের সম্মানি দেয়া হয়েছে ১০ হাজার ৮৪০টাকা। তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের এ অফিসের অধীনে চাকরি করতে হয়, তাই কি আর বলবো। আমাদের প্রতি অনিয়ম করা হয়েছে। খাবারের যে মান এটা নিয়ে বলার ভাষা নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রশিক্ষণে প্রতিদিন সকাল-বিকালের নাস্তাবাবদ বরাদ্দ আছে ১০০ টাকা আর দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দ আছে ৪০০ টাকা। কিন্তু খাবারের মান খুবই খারাপ। প্রতিদিন সকালে ১ পিস ডিমের সঙেগ ১টি সব্জি রোল বা স্যান্ডউইচ বা পেটিস ছিলো এবং বিকালে ১০ টাকা দামের ১টা বিস্কুটের প্যাকেট। আর দুপুরের খাবারে ভাত দেয়া হয়। সঙ্গে ছিলো ছোট সাইজ রুই মাছ, পাতলা ডাল। তবে বিরিয়ানীর সঙ্গে ছোট ২ পিচ খাসির মাংস দিয়েছিলেন। এছাড়া ডিম, আলু ভর্তা, পাতলা ডাল, দই, ফিজআপ দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই প্রশিক্ষণে শহরের ইসলামীয়া পচুর হোটেল থেকে খাবার সরবরাহের অর্ডার দেয়া হয়েছিলো। সেখান থেকে সোমবার এই প্রশিক্ষণে দেড় প্লেট ভাত, ১ পিস মুরগীর মাংস (রোস্ট সাইজ), সাথে ডিম, সব্জি, পাতলা ডাল, দই ও হাফ লিটার পানি সরবরাহ করা হয়েছিল। যার দাম হয় ২৪৫ টাকা। মঙ্গলবার ২পিস খাসির মাংস দিয়ে পোলাও, ডাল, আলু ভর্তা, পানি যার দাম ২৪০ টাকা। বুধবার ভাত, রুই মাছ, ডাল, পানি যার দাম ১৬৫ টাকা এবং বৃহস্পতিবার ২পিস খাসির মাংস দিয়ে পোলাও, ফিজ আপ, আলু ভর্তা, পানি যার দাম ২৬৫ টাকা।
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আখতার হোসেন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এই ভ্যেনুতে প্রশিক্ষণ নেয়া প্রশিক্ষণার্থীদের খাবার ও নাস্তা বাবদ বরাদ্দকৃত ৫০০ টাকা থেকে ১০ শতাংশ ভ্যাট কেটে নেয়া হয়। তাতে ৪৫০ টাকা বরাদ্দ থাকে। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারী ৩২৪ জন প্রশিক্ষণার্থী ও ১৮ জন প্রশিক্ষক বাদে আরও ২৩ জন স্টাফের জন্য এ টাকা থেকে খাবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর যাতায়াতের জন্য এক সাইটের ভাড়া দিয়েছি, তাই নওগাঁয় প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রশিক্ষণার্থীদের চেয়ে নাটোরের প্রশিক্ষণার্থীরা কম সম্মানী পেয়েছেন।
তবে, পরিবেশন করা খাবারের দাম নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।