শিক্ষক-শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাবিপ্রবিতে সেশনজটে শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক-শ্রেণিকক্ষ সংকটে পাবিপ্রবিতে সেশনজটে শিক্ষার্থীরা

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পাবিপ্রবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পাবিপ্রবি : শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবসহ নানামুখী সংকটে রয়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) পরিসংখ্যান বিভাগ। বিভাগের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক সংকট। কাগজে-কলমে সাতজন শিক্ষক থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন চারজন। বিভাগটিতে সাতটি ব্যাচের জন্য রয়েছে মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ।

বিভাগটির নিজস্ব কোনো ল্যাব না থাকায় অন্য বিভাগের ল্যাব ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ সংকটগুলোর কারণে বিভাগে তৈরি হয়েছে সেশনজট। সংকট সমাধানে বিভাগটির পক্ষ থেকে বারবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না। এ অবস্থায় দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ, শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব সংকট দূর করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

  

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনজন শিক্ষক ও ৪০ শিক্ষার্থী নিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে পাঠদান শুরু হয়। আট বছরে বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে ২৮০ জন হলেও শিক্ষক বেড়েছেন মাত্র চারজন, এর মধ্যে তিনজন উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে আছেন। শিক্ষক সংকটের কারণে একজন শিক্ষককে সপ্তাহে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি করে ক্লাস নিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার ফলে শিক্ষকরা যেমন গবেষণাকাজে সময় দিতে পারছেন না, পাশাপাশি ক্লাসেও সঠিকভাবে মনোযোগ দিতে পারছেন না।

শিক্ষক সংকট ছাড়াও বিভাগটিতে শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাবের সংকট রয়েছে। বিভাগের সাতটি ব্যাচের জন্য মাত্র দুটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। এ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করতে পারছেন না বলে জানা যায়। নিজস্ব কোনো ল্যাবরুম না থাকায় অন্য একটি বিভাগের ল্যাবে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। তবে ওই ল্যাবটি সব সময় ফাঁকা পাওয়া যায় না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এ সংকটগুলোর কারণে বিভাগে তৈরি হয়েছে সেশনজট। বিভাগটির একাধিক শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, ছয় মাসের সেমিস্টার হলেও তাঁরা কখনো এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারেননি। প্রতি সেমিস্টার শেষ করতে সাত থেকে আট মাস সময় লাগে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দুই থেকে আড়াই বছরের সেশনজটে আছেন। এর আগের ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের দুই ব্যাচ স্নাতক (সম্মান) শেষ করেছেন ছয় বছরে। একই সমস্যার কারণে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে নিতে পারেননি বিভাগটি।

বিভাগের এই অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটে ভুগছি। সেটি সমাধানের উদ্যোগ নেই। বন্ধুরা পড়াশোনা শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছে অথচ আমি এখনো অনার্স শেষ করতে পারিনি।’

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসিন রহমান বলেন, ‘আট বছর আগে খোলা একটা বিভাগে ২৮০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে শুধু চারজন শিক্ষক রয়েছেন এমন চিত্র অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে কি না, সেটা জানি না। অন্য বিভাগের ল্যাবরুমের শিডিউলের জন্য আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। ক্লাসরুম সংকটের কারণে শিক্ষকরা চাইলেও রুটিন করে পরীক্ষা নিতে পারেন না, বিভাগে বসার কোনো জায়গা নেই। দীর্ঘ সেশনজটে আটকে আছি।’

তবে বিভাগটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষক সংকট কাটানোর জন্য প্রশাসনের কাছে একাধিকবার তারা আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন এ সমস্যা কাটানোর জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষপে নেননি। সর্বশেষ বিভাগটির শিক্ষক সংকট কাটানোর জন্য প্রশাসন একজন অধ্যাপক এবং একজন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন। কিন্তু অধ্যাপক পদে কেউ আবেদন না করায় সে পদটি ফাঁকা থেকে যায়। ফলে নতুন করে বিভাগটি মাত্র একজন শিক্ষক পাবে।

বিভাগটির চেয়ারম্যান ড. সাব্বা রুহি বলেন, ‘আমাদের বিভাগে নানামুখী সংকট আছে; কিন্তু সব সমাধান আমাদের হাতে নেই। শিক্ষকরা যতগুলো পারছি, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। অন্যান্য সমস্যা প্রশাসন সমাধান করবে। প্রশাসনকে সমস্যার কথা অবহিত করেছি।’

বিভাগটির সমস্যা নিয়ে উপাচার্য হাফিজা খাতুনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ইউজিসিকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। বিভাগটিতে এরই মধ্যে একজন শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গেছেন, তিনি দ্রুত বিভাগে যোগদান করবেন। অন্য সমস্যাগুলোও সমাধান হবে আশা করছি।’

‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ - dainik shiksha ‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ - dainik shiksha সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সবাইকে নজর রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সবাইকে নজর রাখার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের - dainik shiksha কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সম্মানী নিয়েও প্রতারণা - dainik shiksha শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সম্মানী নিয়েও প্রতারণা দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা - dainik shiksha দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ - dainik shiksha সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028660297393799