গার্ডিয়ান অবলম্বনে, সাবিহা সুমি: শিক্ষকদের সুরক্ষায় ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোর চারপাশে ১৫০ মিটার বাফার জোন নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে, ইংল্যান্ডে সামাজিক সংহতির হুমকির বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে। স্কুল গেটের বাইরে বিক্ষোভ প্রতিরোধ করাই এই বাফার জোন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য।
ব্রিটেনের যেসব স্কুলশিক্ষক তাদের পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে নানারকম হুমকি বা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তাদের সুরক্ষার জন্যে ‘সমন্বয় এবং বিরোধ ইউনিট’ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। শিক্ষক নেতারা এই পদক্ষেপ স্বাগত জানিয়েছেন। এই ইউনিট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব এসেছে ইংল্যান্ডে সামাজিক সংহতির হুমকির বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত এক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে। পর্যালোচনাটির উদ্যোগ নেয়া হয় ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের একটি স্কুলে ধর্ম শিক্ষককে কেন্দ্র করে, যিনি ব্লাসফেমির অভিযোগের পর আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
গত সোমবার প্রকাশিত ওই পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ব্যাটলি গ্রামার স্কুলের শিক্ষককে ভয় দেখানো এবং অপব্যবহারের একটি অনলাইন ও অফলাইন প্রচারে টার্গেট করার পরে তিনি আত্মঘাতী চিন্তা এবং পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। এই শিক্ষক ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে ধর্ম ক্লাসে ফরাসি ব্যঙ্গাত্মক ম্যাগাজিন শাখলি এবদো থেকে নেয়া একটি কার্টুন দেখিয়েছিলেন। অভিভাবকদের তরফ থেকে অভিযোগ এবং স্কুলের বাইরে বিক্ষোভের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিলো। পরবর্তীকালে তিনি ‘ইচ্ছাকৃত অপরাধের’ অভিযোগ থেকে অব্যহতি পান এবং তাকে জানানো হয়েছিলো যে তিনি চাকরি ফিরে পেতে পারেন।
সরকারি ওই পর্যালোচনায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে সমালোচনা করেছে তাদের ওই ঘটনা মোকাবিলার পদ্ধতির কারণে। বিক্ষোভকারীদের সন্তুষ্ট করতে শিক্ষককে বরখাস্ত করতে তারা বেশ ভালো বোধ করেছেন বলে মন্তব্য করেছে ওই পর্যালোচনা প্রতিবেদন।
ব্রিটিশ সরকারের সামাজিক সংহতি এবং স্থিতিতাবস্থা বিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা ডেম সারা খান পরিচালিত এই পর্যালোচনা বলেছে, কিছু মানুষ যারা সত্যাসত্য না জেনে ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানিতে যোগ দেয়, তাদের ধর্মানুভূতি আহত না করার প্রচেষ্টা এবং উদ্বেগ অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিলো।
পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, সমন্বয় এবং বিরোধ ইউনিটগুলো শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষকদের সমর্থন করবে না, এটি পরামর্শ দেবে, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবে এবং সমন্বয় ডেটা সংগ্রহ করবে। এই পর্যালোচনায় ইংল্যান্ডের স্কুলগুলোর চারপাশে ১৫০ মিটার বাফার জোন নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে স্কুল গেটের বাইরে বিক্ষোভ প্রতিরোধ করা যায়।
ন্যাশনাল এডুকেশন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ড্যানিয়েল কেবেদে বলেছেন, যদিও বিক্ষোভ সবসময় শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে যেকোনো ভীতি উদ্রেককারী জমায়েত সীমিত করার।