শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকতা ছেড়ে আওয়ামী লীগে, সম্পদের পাহাড় গড়েন বাবুল

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ময়মনসিংহ |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন বাবুল মিয়া সরকার। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকতা ছেড়ে দেন তিনি। নির্বাচিত হন ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সাদামাটা বাবুল হয়ে ওঠেন ধনাঢ্য ব্যক্তি। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের ছত্রচ্ছায়ায় তিনি গড়ে তোলেন সম্পদের পাহাড়। সম্পর্কে তিনি শরীফের চাচা । 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীফ প্রতিমন্ত্রী এবং এমপি থাকাকালীন তারাকান্দা নিয়ন্ত্রণ করতেন বাবুল। নিয়োগ, বদলি-বাণিজ্য, জমি দখল এবং তদবির—সবকিছুই করতেন মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। এসব করে কামিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। তারাকান্দা বাজারে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, ডুপ্লেক্স বাড়ি, ময়মনসিংহ নগরীতে ৭ ও ১০ তলা দুটি বাড়ি, ফ্ল্যাট, ঢাকায় ফ্ল্যাট, ফিশারিজ এবং শত একর কৃষিজমির মালিক হয়ে যান তিনি।

গত বছরের ডিসেম্বরে উপজেলার পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ নিয়োগে বাবুল মাস্টার, প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে ৬০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বাড়ইপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুল আলম হাসান বলেন, গত বছর পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নাঈম হাসান এবং ল্যাব সহায়ক সমির কুমার পালসহ পাঁচ নিয়োগের চূড়ান্ত আলোচনা হয় বাবুলের বাসায়। এতে ৬০ লাখ টাকায় রফাদফা হয়। নিয়োগের সিংহভাগ টাকা নেন তিনি। ভাগ পান বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল তালুকদার এবং প্রধান শিক্ষক মাহবুব হাসান। বাবুলের কথা ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হতো না। তাঁর অনিয়ম-দুর্নীতির বিচার হওয়া দরকার।

নিয়োগে ৬০ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাবুল তালুকদার বলেন, ‘ভাই, আমি একটু ব্যস্ত আছি। পরে বিষয়টি নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলব।’ পরে আর তিনি কল ধরেননি।

স্থানীয় আফসার উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগেও তারাকান্দার আতঙ্ক ছিলেন বাবুল। শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর তিনিও গা ঢাকা দিয়েছেন। মানুষ সরকারি চাকরি পায় না। আর বাবুল সরকারি চাকরি ছেড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। একসময় ছেঁড়া জুতা, জামা পরে বাবুল চললেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।

স্থানীয় মফিজুল হক নামে এক ব্যক্তি বাবুলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সপরিবারে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এ বিষয়ে বাবুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ভাই বারেক সরকার বলেন, ‘রাজনৈতিক তদবিরের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য করে বাবুল কিছুটা স্বাবলম্বী হয়েছে। কারও প্রতি সে অন্যায় জুলুম করেনি।’

রাজনৈতিক পদ-পদবি ব্যবহার করে যাঁরা কোটি কোটি টাকা ও অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন, তাঁদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সম্পাদক আলী ইউসুফ। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যারা দেশটাকে চুষে খেয়েছে, তাদের কোনোভাবেই ছাড় নয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে দুদক সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। কেউ যদি অবৈধ উপায়ে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম - dainik shiksha ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান - dainik shiksha জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা - dainik shiksha এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি - dainik shiksha কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের - dainik shiksha কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক - dainik shiksha আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0062429904937744