শিক্ষকদের এক ঘণ্টা প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রমের যাত্রা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকদের এক ঘণ্টা প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রমের যাত্রা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

নতুন শিক্ষাবর্ষে (২০২৩) শিক্ষায় আমূল পরিবর্তন আসছে। বদলে যাবে শিখন ও মূল্যায়নের ধরন। কিন্তু যারা নতুনভাবে শেখাবেন, মূল্যায়ন করবেন, সেই শিক্ষকেরা নতুন শিক্ষাক্রম শুরুর আগে পাচ্ছেন মাত্র এক ঘণ্টার অনলাইন প্রশিক্ষণ। 

তিনটি শ্রেণিতে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে—প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম। বাকি শ্রেণিগুলোতে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পর্যায়ক্রমে এই শিক্ষাক্রম চালু হবে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মোশতাক আহমেদ।

নতুন শিক্ষাক্রম চালুর আগে আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার মাধ্যমিক স্তরের তিন লক্ষাধিক শিক্ষককে এক ঘণ্টা করে অনলাইনে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও শিক্ষাবিদেরা শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরুর পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ডিসেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষককে পাঁচ দিনের সশরীর প্রশিক্ষণ দেয়ার পথরেখাও ঠিক করে দিয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারেনি।

মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, শিক্ষকদের ইতিমধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। এখন এনসিটিবির তৈরি করা আধেয়র (কনটেন্ট) ভিত্তিতে বিষয়ভিত্তিক অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাঁচ দিন সশরীর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া না হলে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। দেশে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি বাস্তবায়িত হয়। এখন পর্যন্ত ৩৮ শতাংশের বেশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারেন না (মাউশির তথ্য)। এক ঘণ্টার অনলাইন প্রশিক্ষণে লাখ লাখ শিক্ষক কী শিখবেন, আর কী শেখাবেন, সেই প্রশ্ন রয়ে যায়। পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণও যথেষ্ট নয়।

নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করেছে এনসিটিবি। কিন্তু মাধ্যমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ বাস্তবায়নের কাজটি করছে মাউশি। নতুন শিক্ষাক্রমটি হচ্ছে অভিজ্ঞতাভিত্তিক। এতে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিদ্যমান পরীক্ষার চেয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন (শিখনকালীন) বেশি হবে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত এখনকার মতো প্রথাগত পরীক্ষাই থাকবে না। পরবর্তী শ্রেণিগুলোর মূল্যায়নের পদ্ধতি হিসেবে পরীক্ষা ও ধারাবাহিক শিখন কার্যক্রম দুটিই থাকছে। এখনকার মতো এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে না। শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এসএসসি পরীক্ষা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন দেয়া হয় গত মে মাসে। এরপর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে পথরেখা দেয় এনসিটিবি। এতে বলা হয়, মাধ্যমিক স্তরে ৬৪ জেলায় প্রতি বিষয়ে তিনজন করে মূল প্রশিক্ষক বা মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হবে। তাঁরা আবার প্রতিটি উপজেলায় প্রতি বিষয়ে তিনজন করে শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেবেন। তাঁদের মাধ্যমে ডিসেম্বরে সারা দেশে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

এনসিটিবি ও মাউশিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু জেলা পর্যায়ে মূল প্রশিক্ষক তৈরি করা গেছে। আর কিছু হয়নি। যখন দেখা গেল, শিক্ষকদের পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ ডিসেম্বরে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না, তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায় থেকে বলা হয় অন্তত অনলাইনে প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে।

এদিকে মাউশি ও এনসিটিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন অনলাইন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু করে দিয়ে শিক্ষকদের আগামী বছর দুই দফায় সশরীর প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। এ জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশেষভাবে যোগাযোগ করে এই অর্থ বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকায় জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই প্রশিক্ষণ আয়োজন নিয়ে সংশয় রয়েছে।

প্রশিক্ষণে এত টাকা ব্যয়ের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এনসিটিবি ও মাউশির কর্মকর্তারা বলেন, দুই দফায় শিক্ষকদের সম্মানীসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়েই এই ব্যয় ধরা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলেন শিক্ষকেরা। তাই তাঁদের সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে না পারলে তা হবে খুবই দুঃখজনক।

৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও - dainik shiksha ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠাতা’ দেখিয়ে কলেজ সভাপতির প্রস্তাব দিলেন ইউএনও বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল - dainik shiksha বেরোবি শিক্ষক মনিরুলের নিয়োগ বাতিল এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক - dainik shiksha এমপিও না পাওয়ার শঙ্কায় হাজারো শিক্ষক কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত - dainik shiksha জাল সনদে শিক্ষকতা করা আরো ৩ জন চিহ্নিত এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035178661346436