টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের ভূয়াইদ এলাকার খুংগারচালা জমশের নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুপক্ষের দ্বন্দ্বে স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় স্কুলে উপস্থিতি কমে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার সরজমিন দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষিকা ও তিনজন শিক্ষক একজন দপ্তরি এবং অফিস সহকারী কামরুজ্জামাল ছাড়া আর কারো দেখা মেলেনি। এ সময় প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকের অনুপস্থিতির ব্যাপারে জানতে চাইলে, তারা কিছু জানেন না বলে জানান। বিদ্যালয় চলাকালীন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত নেই কেন জানতে চাইলে, একজন শিক্ষিকা বলেন, গত কয়েক দিনে আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে মারামারি ও বহিরাগত কয়েকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হওয়ায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আসতে দেননি। উচ্চ মাধ্যমিক এ বিদ্যালয়ের কোনো শ্রেণিতে একজন শিক্ষার্থীও উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে জানাতে গণমাধ্যমকর্মী দেখে এগিয়ে এসে স্থানীয় শারীরিক শিক্ষক ফরমান আলী বলেন, প্রধান শিক্ষক মো. হাসমত আলী তার ছোট বোন আছিয়াকে আয়া পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তার বছরের পর বছর অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতায় স্বাক্ষর করে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিবাদ করায় কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়।
কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের দাবি, অভিযুক্ত আয়া কাগজ কলমে উপস্থিত হলেও বছরে কোনো কর্মঘণ্টায় তার দেখা মেলেনি। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত আয়া আছিয়া বেগমের স্বামী জয়নাল আবেদীন ও তার ছেলে মোহন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে গিয়ে প্রতিবাদ করা সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসানকে (আইসিটি) এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষকরা এগিয়ে এলে তারা সটকে পড়েন। একই দিনে স্কুল চলাকালীন রহিমগঞ্জ স্কুলের সাবেক শিক্ষক আ. হালিম মাস্টারের ছেলে সাইফুল ইসলাম, মনসুর ও সামাদের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাসমত আলীকে বেদম প্রহারের অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক মধ্যে মনমালিন্যের জেরে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশে মারামারির ঘটনায় দুপক্ষই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হারুন অর রসিদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে বিষয়টি তদারকি করার জন্য দিয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ সমাধানের চেষ্টা করা হবে।