সরকার পতনের পর চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা।
শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিকার চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে বুধবার হোয়াটসঅ্যাপে চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছেন তিনি।
জিনাত হুদা বলেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল আমাদের সহকর্মী। তিনি সরকারের উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। তাই উনাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অবগত করেছি। আমাদের বেশ কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন, পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সদস্য জিনাত হুদা চিঠিতে লিখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু সংখ্যক শিক্ষক নাজুক অবস্থায় রয়েছেন। চেয়ারম্যান, পরিচালক, ডিনশিপ এবং চাকরি থেকে পদত্যাগ করার জন্য তাদের হুমকি ও আক্রমণ করা হচ্ছে। এখন প্রায় সব বিভাগেই ঘটছে।
কোটাবিরোধীতার নাম করে কিছু শিক্ষার্থী এভাবে বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারা ব্যানার তৈরি করছে, তাদের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাচ্ছে এবং তাদের মান ক্ষুণ্ণ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এর আগে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে জিনাত হুদার পদত্যাগ দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া, ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেফরের পর তাকে জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নেয়া এবং আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় জিনাত হুদার পদত্যাগ দাবি করেন তারা। বিভাগে তার কোনো ক্লাস না করারও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
জিনাত হুদা চিঠিতে বলেন, বুধবার গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয় তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেয়ার জন্য। একইভাবে তারা এখন শিক্ষকদের কোয়ার্টারে ঢুকছে তাদের কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেয়ার জন্য।
এ ছাড়া তারা আমাদের কাছে ‘নোংরা’ লেখা পাঠাচ্ছে। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভীতিকর ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। আমরা নিরাপদ ও সুরক্ষিত নই।
এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কোটা সংস্কার থেকে গণআন্দোলনে সরকার পতনের পর বিভিন্ন দ্প্তরে ব্যাপক রদবদলের মধ্যে বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও পদত্যাগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তর থেকে তাদের অব্যাহতির দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির মুখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরও দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।